তালেবান ক্ষমতা দখলের তিন সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পর শ্রেণিকক্ষে পর্দা দিয়ে ছাত্র আর ছাত্রীদের আলাদা করে বসিয়ে আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান শুরু হয়েছে।
আফগানিস্তানের বড় শহর কাবুল, কান্দাহার এবং হেরাতের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষে নারী শিক্ষার্থীদের আলাদা বসতে হচ্ছে, পাঠ দেওয়া হচ্ছে আলাদা এবং তাদের বিচরণ সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট এলাকায়।
ক্লাস কীভাবে চালাতে হবে, সে বিষয়ে আফগানিস্তানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি সমিতির পক্ষ থেকে একটি নীতিমালা করে দেওয়া হয়েছ। ছাত্রীদের বোরখা পড়া এবং তাদের জন্য আলাদা প্রবেশ পথ রাখতে বলা হয়েছে সেখানে।
নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নারী শিক্ষক রাখার কথাও বলা হয়েছে ওই নীতিমালায়। তাছাড়া মেয়েদের আলাদা করে পাঠ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে অথবা পর্দা দিয়ে আলাদা করা শ্রেণিকক্ষের কথাও বলা হয়েছে সেখানে।
এটা আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবানের বেঁধে দেওয়া নিয়ম কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স। ওই নীতিমালার বিষয়ে এবং ভাগ করে দেওয়া শ্রেণিকক্ষের ছবি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে চলবে সে বিষয়ে তালেবান মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।
অবশ্য তালেবান গত সপ্তাহেই বলেছিল, শিক্ষাদান আবারও শুরু করতে হবে, তবে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে রাকতে হবে।
তালেবানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আফগানিস্তানের ‘সীমিত সম্পদ এবং জনবল’ বিবেচনায় পর্দা দিয়ে শ্রেণিকক্ষ ভাগ করে দেওয়া ‘খুবই যৌক্তিক’। শ্রেণিকক্ষের দুই পাশে একই শিক্ষকের পাঠ দেওয়াটাই ‘সবচেয়ে ভালো’ উপায়।
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ২১ বছর বয়সী আঞ্জিলা ক্লাসে ফিরে শ্রেণিকক্ষ পর্দা দেখার কথা রয়টার্সকে বলেছেন। তার ভাষায়, এটা ‘মেনে নেওয়া যায় না’।
“যখন ক্লাসে ঢুকি, আমার তখন ভয় লাগছিল… আমরা ধীরে ধীরে ২০ বছর আগের সময়ে ফিরে যাচ্ছি।”
আঞ্জিলা জানান, তালেবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার আগেও ছাত্র আর ছাত্রীরা ক্লাসে আলাদাই বসত। কিন্তু এখন মাঝখানে পর্দা দিয়ে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।