‘তালেবান’ ও ‘জঙ্গি সংগঠন’ পরিচয়ে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশে দুই বিচারককে হত্যার হুমকি


‘তালেবান’ ও ‘জঙ্গি সংগঠন’ পরিচয়ে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের দুই বিচারককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

জয়পুরহাট ও টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারককে বৃহস্পতিবার ডাকযোগে এ দুটি চিঠি পাঠানো হয়।

জয়পুরহাটে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রুস্তম আলীকে ‘তালেবান’ পরিচয়ে পাঠানো চিঠিতে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ চলবে তালেবানের অধীনে। আদালতে যাওয়ার সময় বিচারক, আইনজীবী, মুহুরি সবাইকে মাথায় তালেবান পাগড়ি পরতে হবে। পাগড়ি না পরলে আদালতে যেতে দেওয়া হবে না। হামলার শিকার হতে হবে। আদালতের আশপাশে পুলিশ থাকবে না। থাকলে তাদের পাখির মতো মারব।’

এ ঘটনায় বিচারক মো. রুস্তম আলীর পক্ষ থেকে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য সদর থানার ওসি একেএম আলমগীর জাহানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ওসি একেএম আলমগীর জাহান বলেন, চিঠির প্রেরক হিসাবে সদর উপজেলার দুর্গাদহ এলাকার আশরাফ আলী উল্লেখ করা হয়েছে। তবে চিঠিতে দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, চিঠিটি পড়ে এবং এর ভাষা ও লেখা দেখে মনে হয়েছে ক্লাস এইট নাইনে পড়া কারও লেখা এটি।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিনকে হত্যার হুমকি দিয়ে ‘জঙ্গি সংগঠন’ নামে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা জঙ্গি সংগঠনের লোক। আমরা যখন যাকে টার্গেট করি তাকে হত্যা করি। এটাই আমাদের পেশা। এবার আপনাকে হত্যার পালা। কারণ আপনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসার পর অনেক মামলার রায় দিয়েছেন। তাতে আমাদের লোকজনের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়, বিচারককে হত্যা করতে ব্যর্থ হলে তার ঘনিষ্ঠ স্বজন আউট সোর্সিং হিসাবে প্রসেস সার্ভার পদে চাকরিরত এক ছেলেকে জবাই করা হবে। চিঠিতে প্রেরকের স্থানে জুবায়ের রহমান লেখা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন বিচারক খালেদা ইয়াসমিনসহ তার পরিবারের লোকজন। তিনি জানান, চিঠি পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিচারক খালেদা ইয়াসমিন ও তার পরিবারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল র‌্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, র‌্যাবের সব টিম বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *