জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) পুরোনো ভবনে এখন ক্রীড়াবিদদের পদচারণাই বেশি। কারণ, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অফিস নতুন ২০ তলা টাওয়ারে স্থানান্তরের পর পুরনো ভবনে করা হয়েছে কয়েকটি ফেডারেশনের কার্যালয়, ক্রীড়াবিদদের আবাসনের ব্যবস্থা। আসন্ন এসএ গেমস সামনে রেখে কয়েকটি ডিসিপ্লিনের ক্রীড়াবিদদের আবাসন এই ভবনে। এর মধ্যে গত এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী ভারোত্তোলক মারিয়া আক্তার সীমান্তরাও থাকেন।
আজ (শুক্রবার) সকালে এনএসসির এই পুরোনো ভবনের দোতলায় আগুন লেগেছিল। এক সময় যেখানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয় এবং তার সভাকক্ষ ছিল, তারই একটি কক্ষে আগুন লাগে। একই ফ্লোরে পাশেই ভারোত্তোলনের মেয়েদের আবাসিক ক্যাম্প। ওপরে (তৃতীয় তলায়) কাবাডির মেয়েদের ক্যাম্প, যারা এখন সফর করছে ভারত। এনএসসির পুরনো ভবনে এসএ গেমসের আবাসিক ক্যাম্পে থাকেন মহিলা কাবাডি দল, ভারোত্তোলনের মহিলা ও পুরুষ দল, তায়কোয়ান্দো মহিলা ও পুরুষ দলও।
আগুন লাগা কক্ষটি ব্যবহার হতো স্টোররুম হিসেবে। তায়কোয়ান্দো, কুস্তি ও ভারোত্তোলন খেলার ফোম, ম্যাট, চেয়ার টেবিল ও খেলার অন্যান্য আনুষঙ্গির সরঞ্জাম সেখানে স্তুপ করে রাখা হয়েছিল। সকাল ১০ টার দিকে সেখানে আগুন লাগে। শুক্রবার বলে ক্রীড়াবিদদের ক্যাম্পে কেউ ছিলেন না। দ্রুত আগুন নেভানো না গেলে বড় ধরনের দূর্ঘটনাও ঘটতে পারতো।
ঘটনার সময় ভবনের নিচেই ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিরাপত্তা প্রহরী আবদুস সালাম। তিনি জানান, ‘সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০ টার দিকে দোতলায় প্রচন্ড ধোঁয়া দেখতে পেয়ে ‘আগুন আগুন’ বলে চিৎকার শুরু করি। আমরা নিজেরা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। পরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসে। তারা দ্রুতই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।’
সরেজমিনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরোনো ভবন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, চেয়ার-টেবিল, তায়কোয়ানদো ও কুস্তির ম্যাট পুড়ে গেছে। পোড়া মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে এনএসসির কর্মচারীরা, পুরো মেঝে পানিতে ভেজা। চারিদিকে পোড়া গন্ধ।
এনএসসি ভবনের আবাসিক ব্যবস্থা এমনিতেও ভালো নয়। চারপাশে নোংরা। এতটা বাজে পরিবেশ যে, ক্রীড়াবিদরা বলে থাকেন গুদামঘর। শুক্রবার বলে বাসায় ছিলেন গত এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী নারী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। ‘বড় ধরনের বিপদ হতে পারতো। ছিলাম না বলেই আল্লার রহমতে বেঁচে গেছি। আমাদের আবাসনের পরিবেশটা আরো ভালো হওয়া উচিত’-বলেছেন মাবিয়া।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মাসুদ করিম বলেছেন, ‘আমি সকালেই শুনেছি। আমাদের লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস মিলিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিন দিন অফিস বন্ধ। খুললে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করবো। কারণ, ওই ফ্লোরসহ অনেক জায়গায় আমাদের ক্রীড়াবিদদের ক্যাম্প। কি কারণে আগুন লেগেছিল, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’