সম্প্রতি চীনের উহান শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক অন্তঃসত্ত্বা মা সন্তান প্রসব করেন। জন্মের ত্রিশ ঘণ্টা পর নবজাতকের শরীরেও করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এই ঘটনার পর চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন, গর্ভের সন্তানও প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরের একটি হাসপাতালে গত রোববার জন্ম নেয়া ওই শিশুটি ছেলে না মেয়ে তা এখনো জানানো হয়নি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেই ওই মা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। জন্মের ৩০ ঘণ্টা পর শিশুটির শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়।
নবজাতক ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে, এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে উহানের সরকারি শিশু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনদিন বয়সী শিশুটির শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালটির নবজাতক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. জেং লিংকং বলেন, ‘এই ঘটনা আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক করেছে যে, করোনাভাইরাস নামের নতুন এই ভাইরাস নানাভাবে একজন থেকে আরেকজনের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। কেননা মা থেকে শিশুর শরীরের সংক্রমিত হওয়ার মতো ব্যাপার আমরা প্রত্যক্ষ করলাম।’
তবে এই নবজাতক প্রথম নয়, এর আগে উহান শিশু হাসপাতালে ১৭ বদিন বয়সী আরেক শিশুর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। গত ১৩ জানুয়ারি জন্মের পর শিশুটি প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। গত ২৬ জানুয়ারি মায়ের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর শিশুর কাশি ও জ্বর শুরু হয়।
তবে চীনের হেইলংশিয়াং প্রদশের রাজধানী হারবিনের এক হাসপাতালে সুস্থ সন্তান প্রসব করেছেন করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক মা। হারবিন নগর স্বাস্থ্য কমিশন গত সোমবার জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী হাসপাতালে ভর্তি হন।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তিনি সুস্থ সন্তান প্রসব করেছেন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে একদিনেই আরও ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে চীনের মূল ভূখণ্ড ও এর বাইরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯২ জনে। মঙ্গলবার চীনে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৮৮৭ জন। এখন পর্যন্ত চীনে প্রতিষেধকবিহীন এই ভাইরাসে ২৪ হাজার ৩২৪ জন আক্রান্ত হলেন।