আইসিসিতে শুরু হলো মানু শাওনির যুগ


ক্রীড়া ডেস্ক :: তিন মাস পরেই তার দায়িত্ব নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইসিসি সিদ্ধান্ত নিলো আগেই মানু শাওনিকে দায়িত্বে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। যে সিদ্ধান্ত সেই কাজ। তিন মাস আগেই, অর্থ্যাৎ আজ থেকেই আইসিসির প্রধান নির্বাহীর চেয়ার পেয়ে গেলেন নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা। সে সঙ্গে প্রায় শেষ হয়ে গেলো ডেভ রিচার্ডসন যুগ। আইসিসিতে শুরু হয়ে গেলো মানু শাওনির যুগ।

আইসিসির কার্যনির্বাহী কমিটি, চেয়ারম্যান কিংবা প্রেসিডেন্টরা ভুমিকা রাখেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা প্রনয়নের কাজে। কিন্তু আইসিসি পরিচালনা, কার্যনির্বাহী কমিটির নেয়া সিদ্ধান্ত কিংবা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সব দায়িত্ব থাকে প্রধান নির্বাহীর হাতেই। মূলতঃ সারা বিশ্বে ক্রিকেটকে পরিচালনায় আইসিসির যে দায়িত্ব তার পুরোটাই পালন করতে হয় প্রধান নির্বাহী এবং তার টিমকে।

এ কারণে আইসিসিতে মূলতঃ চেয়ারম্যানের পর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিই থাকেন প্রধান নির্বাহী। অনেক সময় প্রধান নির্বাহীর মতের বাইরে যেতে পারে না কার্যনির্বাহী পরিষদও। সে জন্য আইসিসিতে এই পদটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গত জানুয়ারিতেই আইসিসির নির্বাহী কমিটিতে মানু শাওনির নিয়োগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ওই সময়ই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পরই জুলাই থেকে নতুন প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেবেন শাওনি। কিন্তু তার তিন মাস আগেই তাকে দায়িত্বে বসিয়ে দেয়া হলো। একটাই কারণ, আইসিসি চায়- নতুন প্রধান নির্বাহী আসা মানে বড় ধরনের এই পরিবর্তন। সেনই পরিবর্তনটা যেন খুব স্মোথলি ঘটে, সে কারণেই মানু শাওনিকে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই চেয়ারে বসিয়ে দেয়া হলো।

এর অর্থ, বিদায় নিতে যাওয়া প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন কিন্তু এখনই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন না। তিনিও দায়িত্ব পালন করবেন আগামী জুলাই পর্যন্ত। অর্থ্যাৎ, পুরনো প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে আগামী তিনমাস দায়িত্ব ভাগাভাগি করে কাজ করবেন নতুন প্রধান নির্বাহী।

এ ক্ষেত্রে আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত ডেভ রিচার্ডসনের মূল দায়িত্ব থাকবে শুধুমাত্র বিশ্বকাপ সম্পর্কিত বিষয়াদি দেখভাল করা। বাকি দায়িত্ব পালন করবেন মানু শাওনি।

আজকে দায়িত্ব বুঝে নিলেও, নিয়োগ পাওয়ার পর অনেকগুলো আইসিসির কার্যনির্বাহী বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন মানু শাওনি। এমনকি বোর্ড মিটিংয়েও যোগ দেন। দায়িত্ব আজ বুঝে নিলেও ইতিমধ্যে একটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করেছেন শাওনি। সেটা হচ্ছে, আইসিসি বিশ্বকাপের ব্রডকাস্ট স্বত্ব সাইকেল নতুন করে নবায়ন করা। ২০২৩ সালের পর নতুন ব্রডকাস্টার ঠিক করার প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি।

মানু শাওনির নিজেরও অপেক্ষা আর সইছিল না। তিনিও চাইছিলেন খুব দ্রুত দায়িত্ব বুঝে নিতে। সে কারণেই শাওনি বলেন, ‘আমি এই সুযোগটা পাওয়ার কারণে খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। একই সঙ্গে চাচ্ছিলাম খুব দ্রুতই আমাদের সদস্য, পার্টনারস এবং স্টাফদের সঙ্গে কাজ করতে। যারা খুব দ্রুতই এই খেলাটিকে বৈশ্বিক হিসেবে রূপ দিতে চাচ্ছেন। টেকনোলজি, এনগেজমেন্ট, নারী ক্রিকেট এবং এই খেলাটির মূল্য বাড়ানোর ক্ষেত্রটাই হচ্ছে আমাদের কাছে মূল বিষয়।’

ভারতীয় বংশোদ্ভূত শাওনি আইসিসির নমিনেশন কমিটি একবাক্যে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ চূড়ান্ত করে। তার ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত ছিল না। ইএসপিএন স্টার স্পোর্টসে ১৭ বছরের ঈর্ষণী ক্যারিয়ার ছিল তার। যেখানে তিনি ম্যানেজিং ডিরেক্টর পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলেন। ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আইসিসির গ্লোবাল ইভেন্টের যে সম্প্রচার স্বত্ব ইএসপিএন পেয়েছিল, তা ছিল শাওনির হাত ধরেই।

ইএসপিএন থেকে তিনি পরে চলে যান সিঙ্গাপুর স্পোর্টস হাবে (এসএসএইচ)। যেখানে তিনি প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অডিট কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।