আগুনে পাঁচজনের মৃত্যুতে বিয়েবাড়িতে শোকের মাতম


কয়েকদিন আগেই আত্মীয়ের বিয়েতে হবিগঞ্জ থেকে সপরিবারে মৌলভীবাজারে এসেছিলেন দীপা রায় (৩৫)। গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিয়ে শেষ হলেও গতকাল সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ছিল বৌভাতের অনুষ্ঠান।

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবারের সঙ্গেই হবিগঞ্জে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল দীপা রায়ের। কিন্তু মেয়েকে নিয়ে আর বাড়ি ফেরা হলো না তার। আগুনে পুড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু হবে ভাবেননি দীপা রায়ের পরিবারের সদস্যরা।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ১০টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের সাইফুর রহমান রোডের পিংকি সু স্টোরে লাগা আগুনে দীপা রায় ও তার মেয়েসহ মারা যান পাঁচজন। বিয়ের আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। তাদের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না কেউ।

মৃতরা হলেন পিংকি সু স্টোরের মালিক সুভাষ রায় (৬৫), সুভাষ রায়ের মেয়ে প্রিয়া রায় (১৯), সুভাষ রায়ের ভাইয়ের স্ত্রী দিপ্তী রায় (৪৮), সুভাষ রায়ের শ্যালকের স্ত্রী দীপা রায় (৩৫) ও দীপা রায়ের মেয়ে বৈশাখী রায় (৩)।

পৌরশহরের সেন্টাল রোডের দোতলা ভবনের যে দোকানে আগুন লেগেছিল ওই দোকানের ওপরের বাসায় স্বজনদের সঙ্গে এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন দীপা রায়। আগুন লাগার পর বাসার অন্যান্য সদস্যদের মতো দীপা রায়ও বাসায় আটকা পড়েন। প্রাণ বাঁচাতে আরও অনেকের সঙ্গে তার ছেলে বাসার বাইরে আসতে পারলেও ছোট মেয়ে বৈশাখীকে নিয়ে বের হতে পারেননি মা দীপা রায়। ফলে অন্য তিনজনের সঙ্গে মারা যান মা-মেয়ে।

দীপা রায়ের স্বজন কল্প রায় বলেন, কয়েকদিন আগেই বিয়েতে যোগ দিতে সপরিবারে মৌলভীবাজারে আসেন দীপা রায়। তার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের উমেদনগরে। তার স্বামী সজল রায়। আগুনে পুড়ে দীপা ও তার মেয়ে মারা যায়।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, নিহতদের মধ্যে তিনজন একই পরিবারের ও দুজন মা-মেয়ে। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মৌলভীবাজার ফায়ার স্টেশনের উপপরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা বলেন, গ্যাসের রাইজার ফেটে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত করে আগুন লাগার সঠিক কারণ উদ্ঘাটন করা হবে।