আলিয়াঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকায় লা গ্যালারিতে শুক্রবার, ৮ এপ্রিল শুরু হলো শিল্পী সালমা জাকিয়া বৃস্টি ও জুবাইদা আরজু সোমার ’তনুমধ্যা’ শীর্ষক যৌথ চিত্র প্রদর্শনী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চন্দ্র শেখর শাহা, ডিজাইনার, গবেষক ও লেখক এবং সীমা হামিদ, উদ্যোক্তা।
আলিয়াঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গয়না নামটি সাজসজ্জার প্রধান একটি আকর্ষণ। পোষাক ও গয়না একে অপরের পরিপূরক হলেও বিভিন্ন যুগে গয়না ব্যবহারের উদ্দেশ্য ও ধারাগুলো ভিন্ন তাই এটি কোন নির্দিষ্ট ধাতু ও নকশাতে আবদ্ধ না থেকে বিভিন্ন রূপে এর আকর্ষন বাড়িয়ে তুলেছে। এই প্রদর্শনীতে দুজন শিল্পীর গয়না তৈরীর উদ্দেশ্যটি কিছুটা ভিন্ন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলা সাহিত্যের প্রতি আগ্রহের বেশীরভাগই দেখা যায় আধুনিক যুগের গল্প কবিতা বা উপন্যাসকে ঘিরে। আমাদের প্রাচিন বা মধ্যযুগে রচিত যে সকল সমৃদ্ধ গল্প কবিতা বা উপন্যাস রয়েছে তা বর্তমান প্রজন্মের অনেকেরই অজানা।
তাই এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা চেষ্টা করেছেন বিভিন্ন সময়ের বাংলা সাহিত্যের কিছু অনবদ্য চরিত্রের সাথে তাদের শিল্পকর্মের সমন্বয়ের। শুধু মাত্র চরিত্র বা বিষয়বস্তুুকে তুলে ধরা নয় বিভিন্ন সাহিত্যের গয়না নিয়ে মনোস্তাত্তিক টানপোড়নের প্রভাবও রয়েছে এই গয়নাতে। আমাদের সাহিত্যে যেমন রয়েছে শির্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় রচিত ‘গয়নার বাক্সে’ গল্পের রাসমনির নিজ গয়না ব্যবহার করতে না পারার অতৃপ্ত মনের চিত্র, তেমনি আবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প ‘মণিহারা’তে রয়েছে মনিমালিকার নিজ গহনা রক্ষা করার জন্য গয়না সহ নদীতে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করার দৃশ্য।
শুধু গল্পের কাহিনী মনে হলেও গয়নার সাথে মানুষের এরকম আত্মিক সম্পর্কের কথা অনস্বীকার্য। বিভিন্ন গল্প কবিতার মুলভাব বা চরিত্রের আলোকে প্রায় ৭০টি শিল্পকর্ম নিয়ে এই দ্বৈত প্রদর্শনীটির পরিকল্পনা করেছেন শিল্পী সালমা জাকিয়া বৃস্টি ও জুবাইদা আরজু শোমা। তাদের তৈরী এই গয়নাগুলোর মাধ্যমে আমাদের নতুন ভাবে মনে করিয়ে দিবে বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী কয়েকটি সৃষ্টির কথা।
প্রদর্শনীটি চলবে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত। সোমবার থেকে শনিবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে। রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।