আল্টিমেটাম দিয়ে বয়সসীমা ৩৫-এর আন্দোলন স্থগিত


সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ চার দাবিতে টানা প্রায় এক মাস অনশনের পর আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে এ আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ সহ চার দাবি মেনে না নিলে আবারো কঠোর আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ চার দাবিতে টানা প্রায় এক মাস জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খোলা আকাশের নিচে কনকনে শীতের মধ্যে অনশনে বসেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নেতাকর্মীরা। এ আন্দোলনে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে সুরাইয়া ইয়াসমিন, মোশাররফ হোসেন সোহেল, রেশমা আক্তার, মোসাদ্দেক আলী রাসেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস না পেলেও আগামী এক সপ্তাহ আন্দোলন স্থগিতের এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মুজাম্মেল মিয়াজী বলেন, ‘কনকনে শীতে আমরণ অনশন পালন করে আমাদের অনেকে মৃত্যু ঝুঁকিতেও পড়ছেন অনেকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ দীর্ঘ এক মাস অনশনের পরেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে ২৮ লাখ শিক্ষিত যুব সমাজ। ২৮ লাখ শিক্ষিত যুব সমাজের ওপর এমন অবহেলা এবং অবজ্ঞার প্রতিবাদে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দাবি না মানা হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হব।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি না করে সরকার ২৮ লাখ মেধাবীদের ঠকাচ্ছে এবং ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। মানববতার মা (শেখ হাসিনা) আজ আপনি কোথায়? আপনার সন্তানেরা আজ চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ সহ চার দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দীর্ঘ এক মাস অনশন করে আসছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত আপনার পক্ষ থেকে কোনরকম সাড়া দেননি। আমরা মাত্র চাকরিতে আবেদনের সুযোগ চেয়েছি। আমরা এ দেশ এবং জাতির সেবা করে বাঁচতে চাই। দয়া করে আমাদের আবেদন করার সুযোগ দিন।’

আন্দোলন অংশ নেয়া কর্মীরা বলেন, ‘সেশনজটে আমরা চার বছর হারিয়েছি, আজ বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু ৫৭ থেকে ৭৩ হয়েছে তবে কেন আবেদনের বয়সীমা বাড়বে না? পরিবার, সমাজ এবং জাতির কাছে যেহেতু আমরা আজ অবহেলিত তাই এই সার্টিফিকেটের মেয়াদহীন জীবন দিয়ে আমরা বেঁচে থাকতে চাই না। আশা করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অতি শিগগিরই আমাদের দাবি মেনে নিয়ে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর মুখে হাসি ফোটাবেন। দাবি না মেনে নেয়া হলে আমারা কঠোর কর্মসূচি পালন করব।’

তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীতকরণ, আবেদন ফি কমিয়ে (৫০-১০০) টাকার মধ্যে নির্ধারণ, নিয়োগ পরীক্ষাগুলো জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে নেয়া ও ৩-৬ মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নসহ সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।