আমাদের প্রত্যেকের পুরো জীবনটাকে যদি একটা কয়েকঘন্টার কাল্পনিক চলচ্চিত্রে নিয়ে বিশ্লেষণ করা যেতো, তাহলে তাতে সুস্পষ্টভাবে জীবনের উত্থান-পতন লক্ষ্য করার সুযোগ ছিলো। শুধু তাই না, এর পিছনে কাদের অবদান কতটুকু ছিলো তাও ফুটে উঠতো।
সব মানুষের বোধশক্তি যেমন এক না, তেমনি সবার সফল হওয়ার গল্পটাও ভিন্ন। কে আপনার আসল শুভাকাঙ্ক্ষী আর কে তলে তলে আপনার জন্য গর্ত খুঁড়ছে তা সবাই ই বুঝতে পারেন- হয়তো কেউ বুঝতে পারেন তাৎক্ষণিকভাবে আর কেউ বুঝতে দিন,মাস বা বছর যায়! যখন বুঝতে পারেন,তখন স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিকারীর প্রতি ঘৃণা বা প্রতিশোধপ্রবণতা জন্মায়, কিন্তু হয়তো চেপে যান বা সবুর করেন। যে অন্যের ক্ষতিতে ব্যস্ত, সে নিজের ব্যাপারে একেবারে উদাসীন থাকে। তার উপরও যে সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে কঠিন বিপদ আসতে পারে তা তার চিন্তায়ই থাকেনা। হয়তো সে অন্যের ক্ষতি করে পৈশাচিক আনন্দ পায়!
শত্রু বানানোর জন্য ঝগড়া করতে হবেনা, আপনি ভালো কাজ করতে থাকেন- দেখবেন অটোমেটিক শত্রু হয়ে যাবে অনেকে। শুধু সাপ না,কিছু মানুষ ও বিষাক্ত হয়।আফসোস, সাপকে চিনে সতর্ক হওয়া গেলেও বিষাক্ত মানুষগুলো কে চিনে সাবধান হওয়ার সুযোগ নাই। তাই জীবনে যথাসম্ভব চোখকান খোলা রেখে চলতে হবে। অতি সরল হওয়া নিজের জন্যেই ক্ষতি, সবাই ভালো সোজাসাপ্টা মানুষকে সুযোগে কাজে লাগিয়ে স্বার্থোদ্বার করতে চায়। জঙলের সোজা গাছটাকেই সবার আগে কাটা হয়,তা মাথায় রেখে চলতে হবে।
অন্যের ভালো দেখতে না পারার এ পরশ্রীকাতরতা বাঙালির রন্ধ্রেরন্ধ্রে, এ থেকে যারা মুক্ত থাকতে পেরেছে তারা নিঃসন্দেহে একটা সময় সফল হবেই ইনশাআল্লাহ। অন্যের ভালো দেখলে মন থেকে খুশি হোন, পারলে সাহায্য করুন -না পারলে দুয়া করুন তবে কখনোই ক্ষতি করতে যাবেন না বা হিংসা করবেন না। দেখবেন একটা মানসিক প্রশান্তি পাবেন, আর আপনার জন্য ও ভালো কিছুই ঘটবে উপরওয়ালার পক্ষ থেকে।
দিনটা যদি শুরু করতে পারেন ফযরের নামাজ পড়ে,তবে পুরো দিনটাতে আপনি আল্লাহ পাকের হেফাজতে থাকবেন এবং কাজেও অলৌকিক উদ্যম ফিরে পাবেন। চেষ্টা করেন প্রতিটি দিনকে সুন্দরভাবে সাজানোর।
অতীত অপরিবর্তনীয়, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। শুধু আজকের দিনটাই আপনার হাতে,এটাকে সুযোগ হিসেবে নিন। সুযোগ হলো পশ্চিমে ঢলে পড়া সূর্যের মতো, দেরি করলে হারিয়ে যাবে।
আজকের দিনটা সুন্দর করা মানে একটা গর্বিত অতীত ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণের সোপান তৈরিতে ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়া।
হাতের সামনে যে কাজগুলো আছে তা গুরুত্বের ভিত্তিতে যথাসম্ভব শেষ করতে থাকুন,ফেলে রাখবেন না। আজ যা সহজ, ফেলে রাখলেই কাল তা বোঝা মনে হবে।
সবার শারিরীক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য কামনা করছি, সবাই ভালো থাকুন।
আল্লাহ হাফিজ
মাহবুব আজমল দুখু
সাবেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক
(সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রসংসদ ৮৭-৮৮)
সাবেক প্রতিষ্ঠাতা পরিবহন সম্পাদক
(সিলেট এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রসংসদ ৯১-৯২)