উদ্বোধনের ৬ বছর পরও চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষ


সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল বাজার সংলগ্ন মাঠে ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি উদ্বোধনের ৬ বছর পেড়িয়ে গেলেও চালু হয়নি চিকিৎসা সেবা। ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হাওর পাড়ের মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবার স্বপ্ন নিয়ে নির্মিত হাসপাতালটি অনেকটা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করা হলেও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ না দেয়ায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন হাওর বেষ্টিত জগদল ইউনিয়নের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে নষ্ট হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসা উপকরণ।

দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে ২০ শয্যা বিশিষ্ট একটি আধুনিক হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষে ২০১৩ সালে প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন। কিন্তু জনবলের অভাবে দীর্ঘ সময়েও চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা যায়নি।

জানা যায়, অত্যাধুনিক এ হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, অফিস সহকারী ও ল্যাব অ্যাটেনডেন্টসহ ১৩টি পদ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় ৪০টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে এ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ৬ বছরেরও কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হাসপাতাল ভবনটিই এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবন থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। মরিচা ধরেছে লোহার গ্রিলে। ভেঙে পড়েছে জানালার কাচ। ভবনের চারপাশে জমেছে ময়লা-আবর্জনা। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান আসবাব ও যন্ত্রপাতি। এমনকি এখন পর্যন্ত পানি সরবরাহেরও কোনো ব্যবস্থা হয়নি।

সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান গেট ও স্টোর রুমসহ ৫টি ভবনের সব কক্ষেই তালা ঝুলছে। স্থানীয়রা জানান, আমাদের এলাকায় যাতায়াতের ব্যবস্থা বর্ষায় নাউ হেমন্তে পাও, তাদের অনেকেরই চিকিৎসার জন্য দূরে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। যে কারণে তাদেরকে স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। অথচ এ হাসপাতালটি চালু হলে চিকিৎসা সংকটের সমাধান হতো।

এ ব্যাপারে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, “হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। যে কারণে এর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।”

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন আশুতোষ দাস বলেন, “প্রায় ৬ বছর আগে জগদল ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছে, জনবলের জন্য হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না, জনবলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার যোগাযোগ করা হচ্ছে।”


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *