উৎপাদন খরচ বেড়েছে, মুরগি ও ডিমের দাম কমেছে, বিপাকে মৌলভীবাজারের পোলট্রি খামারিরা


একদিকে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে মুরগির খাবারের দাম অন্যদিকে বাজারে কমেছে মুরগি ও ডিমের দাম। এমন পরিস্থিতিতে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন মৌলভীবাজারের পোলট্রি খামারিরা। ফলে দেনা পরিশোধ করতে না পেরে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন জেলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের খামারিরা।

এদিকে পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ইতোমধ্যে ৮০ভাগ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে খামারিদের প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।

স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভজনক হওয়ায় দেশের অন্যান্য স্থানের মতো মৌলভীবাজারের বেকার, শিক্ষিত যুবকরা- ২০০৫-০৬ সালের দিকে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সেই সময় জেলায় প্রায় ৩০০ ছোট আকারের পোলট্রি খামার দিয়ে যাত্রা শুরু হয়।

২০১২ সালের মধ্যে খামারের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭০০ তে। পরবর্তী সময়ে খামারের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে জেলায় নীরব বিপ্লব ঘটে এ শিল্পের।

কিন্তু সরকারের উদাসীনতা এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে একের পর এক মুরগির খাবার ও বাচ্চার দাম বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বড় পুঁজির শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ। ফলে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব অনেক ছোট খামারি।

এ ছাড়া করোনার প্রভাবে বাজারে মুরগি ও ডিমের চাহিদা কমে যায়। সে সঙ্গে পড়ে যায় দাম। অন্যদিকে পোলট্রি খাবারের দাম কয়েক দফা বাড়ে। অনেকে দেনা পরিশোধ করতে না পারায় ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।

খামারিরা বলছে, মুরগির চাহিদা কম হওয়ায় এক হাজার বাচ্চা ফুটিয়েও ২০-৩০ হাজার টাকা লস করতে হচ্ছে। অপর এক খামারি বলছেন, ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও সম্প্রতি পোলট্রি ব্যবসা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না।

ইতোমধ্যে জেলার ৮০ শতাংশ পোল্ট্রি খামার বন্ধের দাবি করেছেন ব্যবসায়ী সমিতি। সম্ভাবনাময় এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

মৌলভীবাজার জেলা পোলট্রি শিল্প অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ মাহমুদুল হাসান বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি যাতে এই শিল্পটাকে ধরে রাখার জন্য এবং যুবকদের স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য যেন ব্যাংকগুলো সহজ শর্তে ঋণ দেয়। তাহলে এই শিল্প সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিবাস চন্দ্র পাল বলেন, আমরা মৌলভীবাজার জেলাতে ১৭শ ৮ জন পোল্ট্রি খামারিদেরকে প্রায় ২ কোটি ২১ লাখ টাকা নগদ আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *