একজন ডাক্তার বনাম ৭৫ হাজার রোগী

banglashangbad

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ৩ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারির পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্য সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে। ফুলছড়ি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মানুষ এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপর নির্ভরশীল।

এছাড়া পার্শ্ববর্তী সাঘাটা ও সদর উপজেলার আরও অন্তত ৫টি ইউনিয়নের মানুষ এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। চরাঞ্চল বেষ্টিত এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে স্বল্প আয়ের মানুষেরা হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পেতে ব্যর্থ হচ্ছে।

অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১১ সালে ৩১ শয্যা হতে ৫০ শয্যায় উন্নতি হলেও এখনও জনবল বহাল রয়েছে ৩১ শয্যার। কিন্তু সেই জনবলও নেই। হাসপাতালটিতে ৯ জন চিকিৎসকের স্থলে মাত্র ৪ জন এখন কর্মরত। আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ ৫ জন জুনিয়র কনসালট্যান্টের মধ্যে গাইনী ও অবস, মেডিসিন, সার্জারি ও এনেসথেসিয়া কনসালট্যান্টের পদ শূন্য রয়েছে।

দীর্ঘদিন হলো ডেন্টাল সার্জন ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) পদ দুটি ফাঁকা রয়েছে। এখানে ডেলিভারিসহ মাতৃস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে ৪ জন মিড ওয়াইফের মধ্যে ৩ জন নিয়মিত কাজ করছেন। অপরজন গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ডেপুটেশনে রয়েছেন। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন না থাকায় বাইরে থেকে রোগীদের তা করতে হয়।

বর্তমানে হাসপাতালের ক্যাশিয়ার, পরিসংখ্যান, ফার্মাসিস্ট এবং স্টোর কিপারের পদ শূন্য রয়েছে। এখানে নার্সের ১৪টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১২ জন। অফিস সহকারী ৪টি পদের মধ্যে ১ জন, নিরাপত্তা প্রহরী ২টি পদের মধ্যে ১ জন, বাবুর্চি ২টি পদের মধ্যে ১ জন এবং ৫ জন পরিচ্ছন্নকর্মীর মধ্যে মাত্র একজন এখন কর্মরত। ফলে হাসপাতালটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকছে না। স্টাফ অভাবে হাসপাতাল পরিচালনায় সমস্যা চলছে।

ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি.এম. সেলিম পারভেজ বলেন, হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে অবকাঠামো নির্মাণ করা হলেও এখনও জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। চরাঞ্চল বেষ্টিত অনগ্রসর এ উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অতিদ্রুত ৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ প্রদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রফিকুজ্জামান জানান, ১২ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ব্যতীত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জনবলের সংকট রয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিংয়ে সম্প্রতি আলোচনা হয়েছে।