একদিনে ৩৭ কোটি টাকা হারাল শেয়ারহোল্ডাররা

banglashangbad

পুঁজিবাজারের বহুল আলোচিত কোম্পানি মুন্নু জুট স্টাফলার্সের পরিচালনা পর্ষদের ঘোষিত লভ্যাংশে হতাশ হয়েছেন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা। ফলে কোম্পানিটির শেয়ার দামে বড় ধরনের পতন হয়েছে।

বুধবার পর্ষদ সভা করে মুন্নু জুট স্টাফলার্সের পরিচালকরা ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কোম্পানিটির পর্ষদের এ সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

নগদ টাকার পরিবর্তে শুধু ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা আসার কারণে বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমতে থাকে। দামের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার না থাকায় একপর্যায়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ২৫০ টাকা কমে যায়।

তবে দিনের লেনদেন শেষে পতনের মাত্রা কিছুটা কমে। এতে আগের দিনের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমে ১৮০ টাকা। এতে একদিনেই কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা হারিয়েছেন ৩৭ কোটি ৩৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

অথচ বড় অঙ্কের লভ্যাংশের ঘোষণা আসছে এমন গুজব ছড়িয়ে গত মাসেই মুন্নু জুট স্টাফলার্সের শেয়ার দাম আকাশচুম্বী করা হয়। ২২ জুলাই যেখানে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ছিল ৬৮৭ টাকা, তা টানা বেড়ে ১১ সেপ্টেম্বর দাঁড়ায় ২ হাজার ৩২ টাকায়।

অবশ্য এরপর থেকেই শেয়ারের দাম কমতে থাকে। ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে ২৩ অক্টোবর শেয়ারের দাম ১ হাজার ৯০ টাকা ৪০ পয়সায় নেমে যায়। লভ্যাংশ ঘোষণার প্রভাবে বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমে ৯০৮ টাকায় চলে এসেছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগের তিন প্রান্তিক মোটা অঙ্কের মুনাফা দেখানো মুন্নু জুট স্টাফলার্সের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) বড় লোকসান করেছে।

আগের তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে (২০১৮ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত) কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছিল ১ কোটি ১৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এতে শেয়ারপ্রতি মুনাফা দাঁড়ায় ৫ টাকা ৭০ পয়সা।

হিসাব বছর শেষে এ মুনাফার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকায়। এতে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২ টাকা ৭৪ পয়সা। এ হিসাবে কোম্পানিটির শেষ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে ৬১ লাখ ১৮ হাজার টাকা।

এদিকে আগের হিসাব বছর ৩৫০ শতাংশের মতো বড় বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়ার পরও শেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটির পর্ষদ আবারও শুধু বোনাস শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে এবারও কোম্পানিটির মুনাফার কোনো ভাগ পেল না বিনিয়োগকারীরা।

এ বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, মুন্নু জুট স্টাফলার্সের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কোম্পানিটি বছর বছর লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দিচ্ছে। অথচ শেয়ার দাম আকাশচুম্বী। কী মধুর সন্ধানে বিনিয়োগকারীরা টাকার পাহাড় ঢেলে কোম্পানিটির শেয়ার কিনছে?

তিনি বলেন, মুন্নু জুট স্টাফলার্স স্বল্প মূলধনের কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের সংখ্যা ২১ লাখের কম। এতো কম শেয়ার হওয়ার কারণে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা সম্ভব হয়। কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজশ করে কোনো চক্র কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে খেলছে কি না তা নিয়ন্ত্রক সংস্থার ক্ষতিয়ে দেখা উচিত।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *