মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) অন্তর্বর্তী আদেশ ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ আদেশকে তিনি ‘রোহিঙ্গা, মানবতা, গাম্বিয়া এবং বাংলাদেশের বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে আইসিজে’র আদেশের পর এক বার্তায় ড. মোমেন এ কথা বলেন। আইসিজের আদেশে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধ এবং গণহত্যার প্রচেষ্টা বা ষড়যন্ত্র না করার জন্য বলা হয়।
ইকুয়েডর সফররত ড. মোমেন বার্তায় বলেন, “এটা মানবতার বিজয় এবং সারাবিশ্বের মানবাধিকার কর্মীদের জন্য একটি মাইলফলক। এটা গাম্বিয়ার বিজয়, ওআইসির বিজয়, রোহিঙ্গাদের বিজয় এবং অবশ্যই বাংলাদেশের বিজয়। স্রষ্টা মানবতা এবং ‘মানবতার জননী’ শেখ হাসিনার কল্যাণ করুন।”
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত এ মামলায় আইসিজের আদেশে চারটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়। এ চার আদেশ হলো-
১. রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধ এবং গণহত্যার প্রচেষ্টা বা ষড়যন্ত্র না করার জন্য মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ।
২. রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে আগামী চার মাসের মধ্যে মিয়ানমারকে অবশ্যই প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। প্রথম প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রতি ছয় মাস পর পর একই ধরনের প্রতিবেদন আদালতের কাছে উপস্থাপন করতে হবে।
৩. গাম্বিয়া ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালতের কাছে প্রয়োজনীয় বিষয়ে আবেদন করতে পারবে।
৪. মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব ধরনের নির্যাতন-নিপীড়নের প্রমাণাদি সংরক্ষণ করতে হবে।
এছাড়া গণহত্যা সনদের ২নং ধারা অনুসারে রোহিঙ্গাদের বিশেষ সুরক্ষার অধিকারী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করার প্রস্তাবও দেন আদালত।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ এনে গত বছরের নভেম্বরে মামলা করে গাম্বিয়া। গত ১০-১২ ডিসেম্বর এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গাম্বিয়ার পক্ষে মামলার শুনানিতে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচারবিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। অন্যদিকে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি।