এবারও হবে রাজপথে ফায়সালা


বাংলা সংবাদ ডেস্কঃরাজপথ থেকেই নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর মাদরাসা ময়দানসংলগ্ন নাইস কনভেশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এই আহ্বান জানান।

টুকু বলেন, দেশ এখন দুর্নীতিতে ভরে গেছে। ফরিদপুরের ছাত্রলীগের সভাপতিই দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। তাহলে রাঘব বোয়ালরা কত টাকা পাচার করেছে তার হিসাব দেশের জনগণ নেবে। তিনি বলেন, ‘এই বয়সে প্রস্তুত আছি আরেকবার যুদ্ধ করার। জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে আমি আছি। সবাই প্রস্তুতি নিন।’

টুকু আরো বলেন, ‘পুলিশ এখন সরকারি দলের কর্মী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার আগে থেকেই দেশের নানা সমস্যার সমাধান হয়েছে রাজপথে। এবারও রাজপথেই ফায়সালা হবে।’

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা লে. কর্নেল আবদুল লতিফ (অব.) ঢাকা থেকে আন্দোলন জোরদার করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রামে আন্দোলন করে কিছু হবে না। ঢাকাকে সুসংগঠিত করতে হবে। ঢাকার রাজপথে রক্ত দিতে হবে। এতেই সরকারের পতন দেখতে পাব।’

সমাবেশে আসার আগে রাস্তায় পুলিশের বাধার কথা উল্লেখ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ঢাকায় আন্দোলন জোরদার করার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘এটি কোন ধরনের গণতন্ত্র?

রাস্তায় আসার সময়ও আমাদের গাড়িবহর আটকে দেওয়া হচ্ছে। তাহলে মানুষের স্বাধীনতা কোথায়?’ তিনি বলেন, ‘আজ জাতীয় ভোটার দিবস। অথচ মানুষ ভোটই দিতে পারে না। আমরা এমন অবস্থা চাই না। এ কারণে আন্দোলনের বিকল্প নেই।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আজ একটা সুন্দর পরিবেশ থাকার কথা ছিল। তার বদলে আমাদের আন্দোলনের বার্তা নিয়ে রাজশাহী আসতে হয়েছে।’

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, হারুনার রশিদ এমপি, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। আরো বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সামসুল হক প্রামাণিক, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন।

এদিকে গত সোমবার সকাল থেকে রাজশাহীর সঙ্গে দেশের সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও নেতাকর্মীরা বিকল্প যানবাহনে সমাবেশে আসেন। দুপুরের পর থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে তাঁরা সমাবেশে যোগ দেন। পথে পথে পুলিশ সদস্যরা সন্দেহজনক ব্যক্তিদের শরীর তল্লাশি করেন। সমাবেশ ঘিরে রাজশাহীতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সতর্কাবস্থায় ছিলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সমাবেশস্থলে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল জলকামান, এপিসি যান এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি করে গাড়ি। এর মধ্যেও খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়। হাজারখানেক মানুষের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই স্থানেই সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। তবে সমাবেশস্থলের বাইরে রাস্তায়ও অবস্থান নিতে দেখা যায় বিএনপির নেতাকর্মীদের। এর মধ্যে সমাবেশস্থলে কয়েকবার হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় কর্মী-সমর্থকদের। এ সময় নেতারা মঞ্চে থেকেই পরিস্থিতি শান্ত করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *