কমলগঞ্জে চা শ্রমিকের বাড়িতে ডাকাতি, স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ অর্থ লুটের অভিযোগ


মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানের এক শ্রমিক ও সিএনজি অটোরিকশা চালকের বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডাকাতির সময় এ দুই বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল খোয়া গেছে বলেও অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে শমশেরনগর ৬ নম্বর শ্রমিক বস্তিতে ও এ  দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় পার্শ্ববর্তী কানিহাটি চা বাগানে নারায়ণ বিনের বাসায় পৃথক ঘটনা দুটি ঘটে বলে জানা যায়। ভুক্তভোগীরা বলছেন মঙ্গলবার রাতে কলাপসিবল গেইট ও দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে নারী পুরুষ সবাইকে বেধে রেখে এক শিশুর গলায় দা ধরে ডাকাতি সংঘটিত হয়ে। পরে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ডাকাতি প্রসঙ্গে শমশেরনগর সিএনজি অটোরিকশা চালক অন্তর রাজভর বলেন, “মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়লে রাত দেড়টার দিকে ১৬ থেকে ১৭ জনের মুখোশ পরা সশস্ত্র একদল ডাকাত প্রথমে বাসার কলাপসিবল গেইট ভাঙ্গে। পরে তারা ঘরের সামনের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় তিনি ঘুম থেকে উঠে পড়লে তাকে ও তার বাবাকে এক দড়িতে বেধে ফেলে। তার মাসহ ঘরের নারীদেরও বেঁধে এক পর্যায়ে একটি শিশুর গলায় লম্বা একটি দা ধরে ঘরের আলমারি ভেঙ্গে তছনছ করে। সে সময় পরিবারের তিন সদস্যের কষ্টের সঞ্চিত নগদ ৩০ হাজার টাকা, আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার, ৫টি মুঠোফোন, একটি ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি, সিলিন্ডারসহ গ্যাসের চুলা ও একটি ডিভিডি লুটে নেয় ডাকাতদল। ডাকাতদল ঘরের আইপিএস সংযোগ খুলে নিলেও বাসার বাইরে ফেলে যায়। সব মিলিয়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে।” অন্তর রাজভর আরও বলেন, “ডাকাতদলের দুই এক জনের হাতে পিস্তল ও বাকিদের সবার হাতে লম্বা দা ছিল।”

এদিকে কানিহাটি চা বাগানের নারায়ণ বিনের ছেলে সঞ্জীব বিন বলেন, “একইভাবে ডাকাতদল এ বাসারও দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে বাসার সবাই বেধে রেখে ডাকাতি করেছে। তারা ব্যবসার নগদ ৬০ হাজার টাকা, ৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার, ব্যবহৃত বিক্রির জন্য রাখা ১৫টি মুঠোফোনসহ প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে।”

কানিহাটি চা বাগানের ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সীতারাম বিন বলেন, একইভাবে পাশাপাশি দুটি চা বাগানে ডাকাতি ঘটনায় সাধারণ চা শ্রমিক পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত সপ্তাহেও আলীনগর চা বাগানে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছিল।

শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, যেভাবে ডাকাতি হয়েছে তাতে বাঁধা দিলে বাসার লোকজন হতাহত হতেও পারতেন। ঘটনাটি পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।