কমলগঞ্জে ছেলেধরা আতঙ্কে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমে গেছে উপস্থিতি


মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলেধরা আতঙ্কের কারণে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাসমূহে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। যে সব শিক্ষার্থীরা স্কুল-মাদ্রাসা ও কলেজে যাচ্ছেন তাদের সাথে পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ কেউ না কেউ সাথে থাকছেন।

ইতিমধ্যে ছেলে ধরা সন্দেহে কমলগঞ্জের দেওরাছড়া চা বাগানে অঞ্জাতনামা ১ বৃদ্ধকে গণ পিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কমলগঞ্জ থানা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার জন্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। প্রচারণার পর উপজেলার পৃথক ২টি স্থান থেকে ২ যুবককে ছেলে ধরা সন্দেহে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।

কমলগঞ্জের বাসিন্দা অভিভাবক নুরুল মুহাইমন বলেন, সারা এলাকায় ছেলেধরা আতঙ্ক। সন্তানদের বাড়ির বাইরে বের করতে সাহস পাচ্ছি না। এসব শুনে বাচ্চারও স্কুলে যেতে চায় না। সবার মধ্যেই এক ধরনের ভয় কাজ করছে।

আরেকজন অভিভাবক রফিকুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে ছেলেধরা সন্দেহে একজনকে গণপিটুনি দিয়ে মারা হয়েছে আমাদের এলাকায়। গতকালও ২ জনকে ধরে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। কেউ বলছে গুজব আর কেউ বলছে সত্যি। এখন সন্তানদের নিরাপত্তাতো আমাদের চিন্তা করতে হবে। তাই আপাতত কয়েকদিন আমার সন্তানদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রেখেছি।

এ ব্যাপারে গোবরধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিতা সিনহা ও প্রিসূর্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভিন আক্তার বলেন, গত কয়েকদিন যাবত ছেলেধরা গুজবের কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। যাদের বাসা স্কুলের পাশে অবস্থিত তারাই আসছেন। তবে স্কুলের পাশের শিক্ষার্থীরাও এখন সাথে অভিভাবক নিয়ে আসছেন ছেলেধরা আতঙ্কের কারণে।

এদিকে এই গুজবে বেশী বিপাকে পড়েছেন দিন-মজুর ও ফেরীওয়ালারা। যারা নাকি বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ফেরী করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করে থাকেন এবং যারা ভ্রাম্যমান ভাবে বাড়ীর বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। তারা এখন প্রায় বেকার সময় অতিবাহিত করছেন। যাদের বিশেষ কোন পরিচিতি নাই তারা তাদের বাসস্থান থেকে এলাকার বাহির হচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান, থানা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলাব্যাপী আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার জন্য মাইকিং করে প্রচারণা করে জনগণকে সচেতন করা হয়েছে। যারা এসব ছেলেধরা গুজব ছড়াচ্ছেন এবং গণপিটুনির মত একটি ফৌজদারি অপরাধ করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।