করোনাভাইরাসের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত চীনের নাগরিকরা ক্রমশ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। যার কারণে তাদেরকে চরম বিপাকে দিন যাপন করতে হচ্ছে।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) অস্ট্রেলিয়া সরকার ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার পরিসর বাড়ানোর পর শত শত চীনা নাগরিককে বিমানবন্দরে আটকে দেয়া হয়েছে। স্বজনদের অপেক্ষায় তারা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও সাক্ষাৎ পাননি। স্বজনদের দেখা না পেয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন।
জানা গেছে, চীন থেকে আগত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের দেশটির বিভিন্ন সরকারী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানিয় কাউন্সিল জানায়, অস্ট্রেলিয়া সরকারের ত্বত্তাবধানে সেখানে তারা সুস্থ ও নিরাপদে রয়েছেন।
‘নিউ সাউথ ওয়েলস’ এলাকার কাউন্সিল সূত্র জানায়, বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে তথ্য বিনিময়ের বিষয়টি পর্যালোচনা করে নতুন এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া সরকার। ফলে নতুন করে অস্ট্রেলিয়া থেকে চায়না ও চায়না থেকে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমন পরবর্তী নির্দেশ দেয়া না পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়।
রোববার সিডনির বাসিন্দা ডিন আপনি কিংসফোর্ড স্মিথ বিমানবন্দরে প্রায় ১২ ঘন্টার মতো ক্লান্ত সময় কাটিছিলেন। ৪০ বছর বয়সী আইটি কর্মী এবং অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক তার মা, স্ত্রী এবং পাঁচ এবং তিন বছর বয়সী দুই ছোট বাচ্চাকে নিয়ে শনিবার বিকেলে সাংহাই থেকে সিডনি পৌঁছেন।
তিনি জানান, পাঁচজনের পরিবারকে হংকংয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে তার পরিবারের সবাইকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। কিংসফোর্ড স্মিথের পরিবার সিডনি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তিনি আর তাদেও পরিবারের সদস্যদের দেখা পাননি। তবে সিডনি ইমিগ্রেশন পুলিশ জানিয়েছে চায়না থেকে আসা অস্ট্রেলিয়ান সকল নাগরিকদের নিরাপদে রাখা হয়েছে।
এদিকে গত শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, শনিবার থেকে মূল ভূখন্ডের চীন দিয়ে যে সমস্ত লোক ভ্রমণ করেছেন বা এখনো ভ্রমণ করছেন তাদের সহ পুরো অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের করোনভাইরাস থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুই সপ্তাহের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষনা করেন।
রবিবার বিশ্বব্যাপী করোনভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪,৫৪৯ জন এবং চীনের মৃত্যুর সংখ্যা ৩০০ পেরিয়ে যাওয়ার কারণে এই আইন কার্যকর হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ায় চায়নাদের থেকে নিরাপদে থাকছেন দেশটির অন্য নাগরিকরা। সার্বক্ষনিক তাদেরকে মাক্স পরে নিজ নিজ বাসা-বাড়িতে অবস্থান করতেও বলা হয়েছে। যার কারনে পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে কোথাও চায়নাদের দেখা মেলেনি।