করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারি রূপ নিয়েছে। ভাইরাসের ছোবল থেকে রক্ষা মিলেনি যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেটের বাসিন্দাদের। মোটরের নগর হিসেবে সমৃদ্ধ মিশিগান লকডাউনে স্তিমিত হয়ে পড়েছে বানিজ্যিক কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে পড়েছে গাড়ি উৎপাদিত সবগুলো কারখানা। ঘরবন্দী জীবন কাটছে লোকজনের। কর্মহীন মানুষের ওপর আর্থিক প্রভাব পড়তে শুরু করছে। সবচেয়ে সংকটে পড়েছেন দেশ থেকে সবেমাত্র এসেছেন এমন অনেকেই। কেউ মাত্র কাজে ঢুকেছিলেন। কেউবা কাজই জুটেনি। ভাড়া বাসায় থাকেন এই রকম বেশির ভাগ লোকজন প্রচন্ড আর্থিক চাপে ভুগছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে মার্কিন সরকার ২ লাখ কোটি ডলার নাগরিক প্রণোদনা প্যাকেজ হাতে নিয়েছে। এ মাস থেকেই নাগরিকদের ঘরে ঘরে নগদ অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেবে সরকার। পাশাপাশি করোনার ক্রান্তিলগ্নে মানুষের পাশে এগিয়ে এসেছে কমিউনিটি সংগঠন সহ তরুণরা। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি ভিন্ন রকম সহয়তা প্রদান করছেন তারা।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত হেমট্রামিক সিটির কাউন্সিলর কামরুল হাসান জানান, দেশ থেকে নতুন এসেই করোনা নামক বিপদের মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন এমন ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়েছে ” বাংলাদেশী আমেরিকান পাবলিক এফিসার্স কমিটি( ব্যাপাক)। সংগঠনের সৈয়দ সায়েদুল হক, সেলিম আহমেদ সহ তিনি নিজে অভাবী মানুষের নামের তালিকা প্রস্তুত করেছেন। ডেট্রয়েট ও হেমট্রামিক সিটির ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে ৫০০ ডলার করে দেয়া হবে। শুক্রবার বিতরণ কার্যক্রম শুরু করবেন তারা।
বাঙালি কমিউনিটির আরেক পরিচিত মুখ নাজেল হুদা। করোনা সংকটের শুরু থেকেই ফেসবুক লাইভে পরামর্শ সহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নানান সহযোগিতা করে চলেছেন। তিনি জানালেন, এ পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে বিনা পয়সায় বেকার ভাতা পাওয়ার ফাইল অনলাইনে খুলে দিয়েছেন।
এছাড়া কয়েকদিন আগে দেশী বাজার গ্রোসারীর সৌজন্যে বিনামূল্যে চাল ও ডাল বিতরণ করে কমিউনিটিতে প্রশংসা কুড়িছেন দেশী বাজারের পরিচালক শেখর দেব জে ।
এদিকে শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছে “চিলড্রেন ক্লিনিক অব মিশিগান “। ডা: মোহাম্মদ হোসেইন জানালেন, ক্লিনিক ও তাদের বন্ধুদের পক্ষ থেকে শিশুদের দুগ্ধ জাত পণ্য, ঔষধ ও পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেয়া হচ্ছে। কেউর দরকার হলে ৩১৩৮৭১১৯১২ নম্বরে যোগাযোগ করতে। সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছেন তরুণ মর্টগেজ ব্যাংকার নাফিসা হোসেইন। তার সাথে সরাসরি বা তার এই ৩১৩৩৭৩১২৩৯ অথবা ৫৮৬২৭৭৯৩৮২ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেছেন। এছাড়া নিঃস্বার্থভাবে বেকার ভাতার রেজিষ্ট্রেশন করে দিচ্ছেন মাহবুব রাব্বি খান। কেউ রেজিষ্ট্রেশন করতে ইচ্ছুক এই ৩১৩৮১৮৮৫৪১ নম্বর যোগাযোগের কথা বলেছেন। মনজুরুল করিম তুহিন, মঞ্জু চৌধুরী, আবদুল জব্বার ও খাজা আফজল বিনা পয়সায় আনএপ্লমেন্ট খুলে দিচ্ছেন। এখনও যারা রেজিষ্ট্রেশন করেননি ৩১৩৯৫৭১৮৫৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।