করোনার টিকা বাংলাদেশ কিভাবে বিনা মূল্যে পাবে?


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি বাড়ছে, একই সঙ্গে চলছে এই রোগের টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা। জাতিসংঘের সর্বশেষ ২০ জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা বানানোর ১৭৩টি উদ্যোগ চলছে। এর মধ্যে কয়েকটি টিকার মানবদেহে পরীক্ষা চলছে।

কার্যকর টিকা আবিষ্কারের সম্ভাবনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনায় আসছে, কিভাবে এই টিকা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসচিব এম এ মান্নান গতকাল জানিয়েছেন, করোনার ভ্যাকসিন বিনা মূল্যে পাবে বাংলাদেশ, সবার আগে পাওয়ার চেষ্টা চলছে।

যে কারণে বিনা মূল্যে করোনার টিকা পাবে বাংলাদেশ

টিকা আবিষ্কার হলে উন্নত দেশগুলোকে সেটা আবিষ্কারকদের কাছ থেকে কিনে নিতে হবে। যেমন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির টিকার জন্য এরই মধ্যে এক কোটি ডোজের চাহিদা দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। চাহিদা জানিয়েছে ব্রাজিলও।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক মুজাহেরুল হক বলছেন, ‘যেসব দেশের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় চার হাজার ডলারের বেশি, তাদের টিকা কিনতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় যেহেতু তার চেয়ে কম, ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো বিনা মূল্যেই টিকা পাবে।’

তিনি জানাচ্ছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ এবং গাভি-র (টিকা বিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট) টিকা পাওয়ার অগ্রাধিকার পাওয়া ৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। এসব সংস্থা নিজেদের অর্থে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে বাংলাদেশকে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এক্সপার্টের সদস্য অধ্যাপক ফেরদৌসী কাদরী এক নিবন্ধে লিখেছেন, কভিড-১৯-এর টিকার জন্য বাংলাদেশ অনেক আগ্রহ নিয়ে অনেক চেষ্টা চালাচ্ছে। এক বা একাধিক টিকা যেন আমরা পরীক্ষা করতে পারি এবং আমরা যেন টিকা পেতে পারি, সেই চেষ্টা হচ্ছে। আমি আশাবাদী, যেসব দেশ কভিড-১৯-এর টিকা প্রথম দিকে পাবে, তার মধ্যে বাংলাদেশ থাকবে।

অধ্যাপক মুজাহেরুল হক বলছেন, ‘টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একটি কৌশল নির্ধারণ করা জরুরি। অনেক দেশের ভ্যাকসিন ট্রায়ালে ভারত, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডের মতো অনেক দেশ যুক্ত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সেখানে যুক্ত হতে পারেনি। তবে ডাব্লিউএইচও সেটা আমাদের দেবে, এটা নিশ্চিত।’

অধ্যাপক মুজাহেরুল হক বলছেন, ‘টিকা পাওয়ার আগেই বাংলাদেশকে নিজস্ব একটি কৌশল নির্ধারণ করতে হবে যে, কারা আগে টিকা পাবে। সেই জনসংখ্যা কত, দ্বিতীয় দফায় কারা পাবে। এর পরে সংগ্রহের কৌশল ঠিক করতে হবে যে আমাদের চাহিদা কত, কিভাবে এবং তটুকু পেতে পারি। তার ভিত্তিতে বাংলাদেশের কত টিকা দরকার, সেটা ঠিক করতে হবে। কোন সোর্স থেকে কতটা পাব ইত্যাদি ঠিক করতে হবে।’

বাংলাদেশে দুটি বেসরকারি ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানির টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। তবে এখনো কোনো টিকা আবিষ্কৃত না হওয়ায় তারা কোনো রকম উৎপাদনের জন্য প্রস্তুতি নেয়নি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *