কারিগরি ত্রুটির জন্যই বিধ্বস্ত হয়েছিলো ইথিওপিয় বিমান


আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: অভ্যন্তরীন কারিগরি ত্রুটির কারণেই ইথিওপিয়া এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত হওয়া বোয়িং ৭৩৭-ম্যাক্স মডেলের বিমানটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিলো বলে দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

গেল ১০ মার্চ ১৪৯ জন যাত্রী ৮ জন ক্রু নিয়ে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-ম্যাক্স মডেলের  ‘ফ্লাইট ৩০২’ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। সম্প্রতি বিমানটি বিধ্বস্তের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়েছে, বিমানটি পুরোপুরি মাটিতে পড়ে যাওয়ার আগে সামনের অংশ কয়েকবার নিচের দিকে নেমে এসেছিল। এ সময় পাইলটরা বোয়িংয়ের নির্ধারিত ম্যানুয়াল মেনে ঠিক করার বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
বোয়িংয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন যে পাইলট নয় বিমানের অ্যান্টি-স্টল সিস্টেমের কারণেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইথিওপিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও পাইলটরা বিমানটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। গেল পাঁচ মাসের মধ্যে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান দ্বিতীয়বারের মতো বিধ্বস্ত হয়।

প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্রুরা বিমানটি পরিচালনার জন্য পুরোপুরি দক্ষ ছিলেন। বিমানটি বাঁচাতে তারা সব ধরনের চেষ্টা যথাযথভাবে করেন। এরপরও তারা সফল হতে পারেননি। তবে প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য বিমানের অ্যান্টি-স্টলিং সিস্টেমকে সরাসরি দায়ী করা হয়নি।

এক পর্যায়ে বিমানের ক্যাপ্টেন অপর পাইলটকে উদ্দেশ্য করে ‘ওপরে তোলো, ওপরে তোলো’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। বিমানের ক্যাপ্টেন ফার্স্ট অফিসারকে নির্দেশ দেয় কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।

এদিকে বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী ডেনিস মুলেনবার্গ স্বীকার করেন যে অ্যান্টি-স্টলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকার কারণে ইন্দোনেশিয়ায় লায়ন এয়ার এবং ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান দুটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

তিনি জানান, অ্যান্টি-স্টলিং সফটওয়্যারের ত্রুটি সংশোধন এবং পাইলটদের জন্য নতুন নির্দেশিকা দেবার পর বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স হবে সবচেয়ে নিরাপদ বিমান। এখন যাত্রীদের আস্থা ফেরানোর জন্য সংস্থাটি সব ধরনের কাজ করছে।

উল্লেখ্য, গেল ১০ মার্চ আদ্দিস আবাবা থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৭ জন আরোহীর সবাই মারা যায়। এরপর বোয়িংয়ের এই মডেলের বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। একের পর এক দেশ বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের উড্ডয়ন বন্ধ রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, বোয়িংয়ের এই মডেল নিরাপদ নয়- এ সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এখনো আসেনি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *