ডেস্ক রিপোর্ট :: কুচবরণ এক কন্যার নাম খোদিয়া দিওপ। সেনেগালের এই তরুণী কালো বর্ণের হয়েও বিশ্বব্যাপী মডেল হিসেবে আলোড়ন তৈরি করেছেন। কালো বলে পিছিয়ে যাননি বরং সবাইকে উপেক্ষা করে নিজেই এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। পশ্চিম আফ্রিকার সেনেগালে খোদিয়ার বসবাস। অবশ্য সেখানকার বেশিরভাগ মানুষই কৃষ্ণাঙ্গ। মূলত, আবহাওয়ার কারণেই সেখানকার বাসিন্দারা কালো হয়ে থাকেন। সেনেগালের প্রায় ৬৫ শতাংশ নারীই যেখানে নিজেদের গাত্রবর্ণ নিয়ে বেশ দ্বিধাগ্রস্থ সেখানে ২২ বছরের খোদিয়া স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ‘দ্য কালার্ড গার্ল’ হিসেবে আখ্যা পেয়েছেন।
যদিও খোদিয়া তার গায়ের রঙের জন্য ছোটবেলা থেকেই বড্ড হেনস্থা হয়েছেন সমবয়সীদের কাছে। একসময় তো প্রচুর পরিমাণে প্রসাধনী ব্যবহার করাও শুরু করেন ত্বকের রঙ বদলাতে। ছোটবেলার সেই দিন কাটিয়ে খোদিয়া দিওপ এখন একজন ‘অ্যাসপায়ারিং মডেল’ ও অভিনেত্রী। ‘দ্য কালার্ড গার্ল’ সংস্থার মাধ্যমে তিনি এই সুযোগ পেয়েছেন। বর্তমানে এই পেশার মাধ্যমে তিনি ফিরে পেয়েছেন আত্মবিশ্বাস। বর্তমানে, খোদিয়ার প্রায় সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি ভক্ত রয়েছে তার ইনস্টাগ্রামে।
প্রকৃত সৌন্দর্যের প্রতীক হলেন খোদিয়া যিনি কুচবরণ সত্ত্বেও ঈশ্বর প্রদত্ত রুপ নিয়ে খুশি। তার মতে, আমি নিজের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কোনো খুঁত দেখতে পাইনা। তবে অন্যরা কীভাবে আমার ত্বকের রঙ নিয়ে নানা মন্তব্য করেন! ছোটবেলা থেকেই অনেকের উপহাসের পাত্র হয়েছি। বর্তমান সমাজে সৌন্দর্যের মূর্ত প্রতীক বলতেই ধরে নেয়া হয় ত্বকের রঙ ফর্সা হতে হবে। কেউ কাউকে সুন্দরী বললেই অন্যের মাথায় ঘুরপাক খায়, তাহলে হয়তো ময়েটি অনেক ফর্সা। এই ধারনাগুলোর সঙ্গে লড়াই করেই আমি আজ এখানে এসেছি।’ খোদিয়ার মতে, বাস্তবতা যতই নির্দয় হোক না কেন সে কখনো বিচলিত হননি বরং নিজের আত্মসম্মানকে বাঁচিয়ে জয় করেছেন প্রতিবন্ধকতা।
গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে খোদিয়া বলেন, আমার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই আমাকে মাদার অব দ্য স্টারস’, ডার্কি এবং ডটার অব দ্য নাইট বলে আখ্যা দিয়েছেন। এই নামগুলোতে আমি কখনো ছোট হয়নি বরং আমার ভালো লাগে কেউ আমার রুপের প্রশংসা করলে। আমি খারাপ মন্তব্যের পক্ষে না। প্রশংসাসূচক সকল মন্তব্যই আমার জীবনকে পাল্টে দিয়েছে।’ খোদিয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আগলে রয়েছে লাখ লাখ ভক্ত। তার একেকটি ছবি যেন সৌন্দর্যের অনন্য মূর্তি।
বর্তমানে খোদিয়া ‘কালার্ড গার্ল’ সংস্থায় কাজ করছেন সেইসঙ্গে ফুল টাইম ডিগ্রি সম্পন্ন করছেন প্যারিসে। তার মতে, ‘সকল খারাপ মন্তব্যকে পায়ে দলে অনেক আত্মত্যাগ করে এই জায়গাটি অর্জন করেছি শুধু পৃথিবীকে দেখানোর জন্য। কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার জ্বালায় না জ্বলে বরং ঈশ্বর প্রদত্ত সৌন্দর্য নিয়ে আমার পথচলা। এখন আমার নাম ‘মেলানিন গুডেস’ অর্থ্যাৎ কৃষ্ণাঙ্গের দেবী।’