কবি পাগল মিজান
তোমার সাথে আমার কথা ছিল বাসায় এসে আমি যদি ভালো হয়ে চলাফেরা করি তাহলে তুমি আমার সাথে যোগাযোগ রাখবে। আগের মতো আমাদের ভালোবাসা ঠিক থাকবে। তোমার কথা শুনে আমার মনটা ভরে গেল। আমি বাসায় চলে এলাম। যেদিন এলাম সেদিন রাত্রে এশার নামাজের সময় তোমার সাথে দেখা হলো। ১লা এপ্রিল দুজনার কথাও হলো। তুমি আমার অভিমানের কথা জানতে চাইলে আর হঠাৎ লাইনটা কেটে গেল, আর কথা বলতে পারলাম না। দু’দিন তোমার কথা মতোই চলতে থাকলাম। কিন্তু তার পরও আমি তোমাকে দেখতে পাইনা। জানালার সামনে আসো না। সব সময় তোমার জানালার পর্দা ফেলানো থাকে। এ অবস্থা দেখে আমি পাগল হয়ে গেলাম তোমার সাথে কথা বলার জন্য। তোমাকে ইশারাও দিলাম তুমি বললে খালা আসলে ফোন দিবে। এর কিছুক্ষণ পর বাহিরে বের হয়ে কি যেন বললে আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না। আর এমন ভাবে আমার দিকে তাকালে যেন তুমি আমাকে ঘৃণা কর। সেটাই ছিল তোমার সাথে আমার শেষ দেখা।
এর মধ্যে হঠাৎ সেদিন তোমার পরিবারের লোক জন আমার জানালার সামনে একটি বড় টিনের বেড়া দিয়ে দিল। আর এই দৃশ্য আমার ছোট বোনের স্বামী সহ্য করতে না পেরে আমাকে বলল ভাই তুই ওর বিয়ের আগে অন্য কোথাও চলে যা। তুই এখানে থাকলে সমস্যা হবে। বিষটা আমার কাছেও অনেক খারাপ লেগেছিল। তাই বাবলাম ভাই টিকই বলেছে। আমার জন্যে তোমার কোনো সমস্যা হোক এটা আমি চাই না। তাই সাথে সাথে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। এবং তোমার ভাইকে ফোন দিয়ে বললাম ভাই যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে। আমরা দু’জনই তো সবকিছু মেনে নিয়েছি। তাহলে কি দরকার ছিলো এই টিনের বেড়া দেওয়ার। উনাকে অনেক অনুরোধ করলাম এটা খোলে দেওয়ার জন্য যেন তোমার বিয়েটা দেখতে পারি। কিন্তু সে আমার কোনো কথা শুনলো না। বরং খালা আমাকে ফোন দিয়ে বলল আমি ফোন দেওয়াতে তোমার নাকি অনেক সমস্যা হয়েছে। তুমি নাকি আমাকে আর জীবনেও ফোন দিবে না। সত্যি তাই, তুমি আর আমাকে ফোন দিলে না। ১লা বৈশাখ গেল, গায়ে হলুদ গেল, বিয়ে গেল, পবিত্র শবেবরাত গেল, অথচ তুমি আমাকে তুমি ফোন দিয়ে বললে না আমি কোথায় আছি, কেমন আছি।
তাই আর সহ্য করতে না পেরে। তোমার স্বামীকে ফোন দিয়ে সব কথা খুলে বললাম। উনি প্রথমে আমাকে সান্তনা দিলেন। কিন্তু পরে আমার কাছে প্রমাণ চাইলেন। এবং তোমার ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলল, সে নাকি আমার জীবন ধ্বংশ করে দিবে। আমি তোমার স্বামীকে প্রমাণ দিলাম, তারপরও আমার ও আমার ছোট বোনের স্বামীর নামে থানায় মামলা দেওয়া হলো। আমি নাকি তোমাকে বিরক্ত করছি। তোমার ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলল। আমি এসে যেন এটা শেষ করি। তা না হলে তোমার সংসার ভেঙ্গে যাবে। আমার বোনের স্বামীকে জেলে নিয়ে যাবে। তাই আমি বাধ্য হয়ে তোমার ফুফুর বাড়িতে এসে ৫০ টাকা ষ্ট্যাম্পে ৩টি স্বাক্ষর দেই। তোমার মায়ের পা ধরে ক্ষমা চাই। থানায় গিয়ে স্বাক্ষর দেই। এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত তুমি আমাকে একটি ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলে না আমি কোথায় আছি, কেমন আছি। ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ফণী এল। ভালোবাসার প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পবিত্র মাহে রমজান এল। তবুও তোমার একটি অনুসূচনা হলো না। যে আমাকে একটি ফোন দেয়ার দরকার। অথচ তোমার সাথে আমার ভালোবাসার দৈহিক সম্পর্ক। তোমার ভাইয়ের সাথে কথা বলায় আমাকে ক্ষমা করতে পারলে না। আর তুমি যে আমার জীবন থেকে চলে গেলে তাহলে আমি কি করে তোমাকে ক্ষমা করে দিব। তাইতো আমার এতো পাগলামি। যতদিন তুমি আমার সাথে কথা না বলবে ততদিন এই পাগলামী চলতে থাকবে ……………….. ?