কোভিড-১৯: মানবদেহে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করছে অক্সফোর্ড


অক্সফোর্ডের গবেষকরা এই ভ্যাকসিনের সফলতার ব্যাপারে যথেষ্ট আত্মবিশাসী। সবকিছু ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এটি মানুষের ব্যবহারের জন্য বাজারজাত করার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন তারা

আগামী সপ্তাহ থেকে নিজেদের গবেষণাগারে তৈরি করা করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা শুরু করতে চলেছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনার ইনস্টিটিউট ও অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের একটি ক্লিনিকাল টিম এই প্রতিষেধকটি তৈরি করেছে।অক্সফোর্ডের গবেষকরা এই ভ্যাকসিনের ব্যাপারে যথেষ্ট আত্মবিশাসী এবং সবকিছু ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এটি মানুষের ব্যবহারের জন্য বাজারজাত করার ব্যাপারে আশাবাদী। তারা জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রাণির দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগে আশাপ্রদ ফলাফল পাওয়া গেছে। এখন তাদের গবেষণার পরবর্তী ধাপ হলো মানবদেহে তাদের এই ভ্যাকসিনের প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা।

এ প্রসঙ্গে এই ক্লিনিকাল টিমের প্রধান গবেষক ও অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান হিল জানান, ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য ইতোমধ্যে ১৮-৫৫ বছর বয়সের ৫১০ জন মানুষকে বাছাই করা হয়েছে।তিনি বলেন, “আমরা ভ্যাকসিনটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণির ওপর আগেই প্রয়োগ করেছি। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আগামী সপ্তাহ থেকে মানবদেহে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা শুরু হচ্ছে।”

“অনেক দ্রুততার সাথে কাজ করা হলেও ভ্যাকসিনটি প্রস্তুত করতে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে,” যোগ করেন অধ্যাপক হিল।বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে অধ্যাপক হিল বলেন, “সেপ্টেম্বর থেকেই এই প্রতিষেধকটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া যাবে আশা করা যাচ্ছে।” তিনি আরও জানান, ভ্যাকসিনটির দ্রুত প্রক্রিয়াজাতকরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তারা একটি আর্থিক তহবিল গঠন করার চেষ্টা করছেন তারা।

বিবিসিকে তিনি বলেন, “আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কাজ করছি। এখানে বৃহৎ পরিসরে ভ্যাকসিন প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব নয়। সারাবিশ্বের চাহিদা মেটানোর মতো অবস্থা এখানে নেই।”অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনোলজিস্ট সারাহ গিলবার্ট এই ভ্যাকসিনের সফলতা নিয়ে আশা প্রকাশ করে বলেন, কোভিড-১৯ দমনে জেনার ইনস্টিটিউট ও অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের তৈরি করা এই প্রতিষেধকটির সাফল্যের ব্যাপারে তিনি ৮০% নিশ্চিত।

যুক্তরাজ্যের প্রধান বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভালান্স বলেন, এক বছরের মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক যদি সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সভব হলে এটিকে আমাদের চরম সৌভাগ্য বলতে হবে।প্রসঙ্গত, অক্সফোর্ডের এই দলটির মতো সারা বিশ্বের কয়েকশ’ প্রতিষ্ঠান কোভিড-১৯ রোগের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, বিশেষজ্ঞদের আশংকা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন তৈরি হতে ১৮ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, বর্তমানে ৭০টির বেশি ভ্যাকসিন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এর আগে চীনের একটি ও যুক্তরাষ্ট্রের ২টি গবেষকদল মানবদেহে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *