গাজীপুরে ৩৩ কেভি বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গ্যাস লাইনে আগুন

banglashangbad

৩৩ হাজার কেভি বৈদ্যুতিক লাইনের তার ছিঁড়ে গ্যাস সরবরাহ লাইনের উপর পড়ায় গাজীপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের সীমানা প্রাচীরের পাশে এই ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের কর্মীরা সেখানে গিয়ে আগুন নেভান। এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

এদিকে আজ (মঙ্গলবার) সকালে এ ঘটনা ঘটলেও বিকেলে ওই পাইপ লাইনের একাধিক লিকেজ দিয়ে প্রচণ্ড বেগে গ্যাস বের হতে দেখা যায়। ফলে যে কোনো সময় আবার বড় রকমের দুর্ঘটনার শঙ্কায় আছেন স্থানীয়রা।

অধ্যক্ষ মো. এনামুল হক জানান, কলেজের পূর্ব পাশের সীমানা প্রাচীরের উপর দিয়ে গাজীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ৩৩ হাজার কেভির লাইন গেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করছিল। বেলা ১১টার দিকে পাশে থাকা ট্রান্সফরমারে একটি বিকট শব্দে স্পার্কিং হয়। বিষয়টি জানাতে স্থানীয় পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে একাধিকবার ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেননি। এর প্রায় ১০মিনিট পর আবারও বিকট শব্দে বিদ্যুতের তারে স্পার্কিং হয় এবং ৩৩ হাজার ভোল্টের একটি তার ছিঁড়ে নিচে থাকা তিতাসের সরবরাহ লাইনের ছিদ্রপথে নির্গত গ্যাসের উপর পড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে স্থানীয় গ্যাস অফিস ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়।

জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. আবু ইউসুফ জানান, কলেজের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে তিতাস গ্যাসের একটি সরবরাহ লাইন চলে গেছে। লাইনটির বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের লিকেজ রয়েছে। ওই লিকেজ দিয়ে প্রচণ্ড বেগে গ্যাস বের হচ্ছে। আজ (মঙ্গলবার) বেলা ১১টার দিকে বিদ্যুতের ছেঁড়া তার ওই নির্গত গ্যাসের উপর পড়লে স্পাার্কিংয়ের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি।

তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে গ্যাস লাইনের লিকেজ বন্ধ না করলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমান জানান, রাতে বৃষ্টিপাতের সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে মূল লাইনে সমস্যা হলে তা বন্ধ রেখে বিকল্প হিসেবে কলেজ রুটের লাইনটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। এতে ওভারলোড হওয়ায় লাইনের জাম্পারে স্পার্কিং হয়ে বিদ্যুতের তার বিচ্ছিন্ন হয়ে নিচে পড়ে যায়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে তার মেরামত করে লাইনটি সচল করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহজাহান সিকদার জানান, কয়েক বছর আগে বাংলাবাজার-ভাওয়াল মির্জাপুর বাজার এলাকা থেকে বিডি ফুড কারখানা পর্যন্ত গ্যাস লাইন টানা হয়। সে সময় নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় সম্পূর্ণ অবৈধভাবে রাতের আঁধারে স্থানীয়রা নিম্নমানের পাইপ দিয়ে সংযোগ নেন। এ কারণে বিভিন্ন সময় ওই লাইনের লিকেজ হয়ে ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। বিষয়টি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি।

বিডি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপক বাহাদুর শাহ জানান, ২০১২সালের দিকে তিতাসের সরবরাহ লাইনটি থেকে সংযোগ নিলেও পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ায় কিছুদিন পর তা স্যারেন্ডার করা হয়।

গাজীপুর তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ট্রান্সমিশন অফিসের সুপারভাইজার সামশুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ওই লাইনটি বন্ধ করার জন্য ভাল্বটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই মঙ্গলবার অগ্নিকাণ্ডের সময় সংযোগ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বুধবার সকালে লোকবল নিয়ে লাইনটি উচ্ছেদ করা হবে।