ডেস্ক রিপোর্ট :: পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বিদেশি কোম্পানিগুলো নিজেদের মতো সম্পন্ন করে যাচ্ছে। দেশের প্রকৌশলীদের সেই সক্ষমতা না থাকায় তা জানা বা বোঝার কোনো সুযোগ থাকছে না বলে উল্লেখ করেছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, ‘এই যে চায়নার কোম্পানিগুলো নিজেদের মতো কাজ করল, আমরা জানলামও না, বুঝলামও না। আমাদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার বলেন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বলেন, আপনাদের সক্ষমতা মানে দেশের সক্ষমতা। এ সক্ষমতা যেন আমরা প্রত্যেকে তৈরি করতে পারি।’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে (আইডিইবি) অনুষ্ঠিত ‘জনপ্রত্যাশার আলোকে আধুনিক ও উন্নত রেলসেবা’ শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকার ঐতিহ্যবাহী রেলওয়েকে গর্বের জায়গায় নিয়ে আসার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। বর্তমানে রেলওয়ে খাতে পণ্য পরিবহন ২৫ থেকে ১১ ভাগে নেমে এসেছে। পণ্য পরিবহনে রেলকে আগের অবস্থানে ফিরে নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, মূল প্রবন্ধে রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কথা বলা হয়েছে। আমি শুধু এইটুকু আপনাদের বলব, প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এগুলোর লাভ-লোকসান, ভালো-মন্দ, ঠিক-বেঠিক এবং এর খরচ কীভাবে কমিয়ে এনে এটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে পারি, সেই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সেই পরিকল্পনা গ্রহণ করলেই হবে না, সেটা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এই যে প্রকল্পগুলো হচ্ছে, যেসব বিদেশি কোম্পানি সেগুলো বাস্তবায়ন করছে, তাদের সঙ্গে আমাদের লোককে সেখানে দিতে হবে। যাতে আমাদের লোকজন সেই সক্ষমতা তৈরি করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। এই যে কনসালট্যান্সি (বিভিন্ন প্রকল্পে কনসালট্যান্ট নিয়োগ করা হয়), লাখ লাখ কোটি টাকা আমাদের কনসালট্যান্সির ওপর বিনিয়োগ করতে হয়। সেই সক্ষমতা ধীরে ধীরে আপনাদের তৈরি করতে হবে। কেন আমরা এই অর্থ বিদেশিদের পেছনে খরচ করব?’
‘আজকে ট্রাক বলেন, বাস বলেন, এই যে একটা জঞ্জাল তৈরি হয়েছে। সময় নষ্ট হচ্ছে। রেলওয়ের আমরা যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, এটা যদি বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে সেই সঙ্কট থাকবে না’– যোগ করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলে ব্রিটিশ ভারতের সময় যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধানতম মাধ্যম ছিল রেল ও নদীপথ। আপনারা লক্ষ্য করবেন, সব দেশেই সমান গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়নের ধারার সঙ্গে সবাই এগিয়ে নিয়ে গেছে। ভারত দেখেন। আমরা উন্নত বিশ্বের দিকে যদি তাকাই, যে দেশ যত উন্নত, তার রেল তত উন্নত। তারা রেলকে উন্নয়নের ধারার সঙ্গে সমানভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছে। একমাত্র ব্যতিক্রম আমাদের দেশ।’
বাংলাদেশ রেলওয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি দীপক কুমার ভৌমিক বলেন, রেলওয়ের উন্নয়নে সরকার যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছে, তা বাস্তবায়নে আমাদের সমিতির সদস্য প্রকৌশলীরা সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল আলম বলেন, রেলওয়ে একটি কারিগরি সংস্থা। কাজেই কারিগরি জনবলকে গুরুত্ব দিয়ে রেলওয়ের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।
বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি এ কে এম এ হামিদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিইবির রিসার্চ ফেলো মো. ইয়াকুব হোসেন সিকদার এবং সূচনা বক্তব্য দেন আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন।