জর্ডানে ভালো আছে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকরা


মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক দেশ জর্ডান। দেশটিতে কর্মরত আছে দেড় লাখের বিশ প্রবাসী বাংলাদেশি। এর মধ্যে ৯০ হাজারের বেশি বাংলাদশি নারী কর্মীরা তৈরি পোশাক শিল্প, বিভিন্ন কোম্পানি এবং বাসা বাড়ির গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত আছেন।

জর্ডান মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মতো রাজতান্ত্রিক দেশ হওয়াতে এখানে আইন-কানুন অনেক কঠোর। তারপরেও এখানে আইন সবার জন্য সমান এবং বিচার ব্যবস্থা নিরপেক্ষ।

জর্ডানে তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশি নারী কর্মীরা বেতন পান সর্বনিম্ন ১২৫ জর্ডানি দিনার বা ১৭৫ মার্কিন ডলার। থাকা ও খাওয়া খরচ তৈরি পোশাক কোম্পানিগুলো বহন করে। প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার সরকারি ছুটি এবং ওভার টাইম দেয়া হয়। এতে একেকজন বাংলাদেশি নারী কর্মী মাস শেষে সর্বনিম্ন বেতন পান বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ হাজার টাকা।

যারা বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন তারা সর্বনিম্ন ২০০ মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭ হাজার টাকা পান। বাসা বাড়িতে কর্মরত নারী কর্মীদের অনেক নিরাপত্তা আছে জর্ডানে। এসব কারণে বাংলাদেশি নারী কর্মীরা জর্ডানে কাজ করতে ইচ্ছুক।

জর্ডানের শ্রম আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশি নারী কর্মীদের জর্ডান যেতে কোনো প্রকার অর্থ লেনদেন করতে হয় না। তাদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে জর্ডানে বাসা বাড়ির কাজে গৃহকর্মী হিসেবে পাঠানো যায়। তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত বাংলাদেশি নারী কর্মীদের জর্ডানের অধিকাংশ ফ্যাক্টরিগুলো সম্পূর্ণ বিনাখরচে নিয়োগ দিয়ে থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল-এর মাধ্যমে।

জর্ডানে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-কিছু সংখ্যক অসাধু দালাল বাংলাদেশি নারী কর্মীদের অধিক আয়ের লোভ দেখিয়ে গার্মেন্টস ও বাসা বাড়ির কাজ থেকে বাগিয়ে এনে ঘণ্টা বা দৈনিক বা সাপ্তাহিক হিসেবে কাজ করিয়ে অর্থ আদায় করে। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশি নারীরা বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, সিরিয়া, সুদানি, মিশরীয়সহ বিভিন্ন দেশে অভিবাসী পুরুষ শ্রমিকদের সঙ্গে লিভ টুগেদার করে থাকেন। এতে করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া জর্ডানে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অন্য কোনো সমস্যা নেই। বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে জর্ডানের শ্রম বাজারে।

আম্মানে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আইনগতভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়া হয়। যদি কোনো বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগকর্তা দ্বারা নির্যাতিত হন তাহলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সে সকল কর্মীদের সকল প্রকার সাহায্য ও সহযোগিতা করা হয়।

জর্ডানে যে সকল বাংলাদেশি নারীকর্মী চাকরি গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদেরকে কোনো দালাল বা রিক্রুটিং লাইসেন্সের সঙ্গে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন আম্মানের বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *