জেনে নিন পেশাগত অবসাদের কারণ ও সমাধান


যতই দিন যায়; ততই বদলায় পৃথিবী। বাড়ে প্রতিযোগিতা ও ব্যস্ততা। এখন মানুষ দৌড়ায় লক্ষ্য ও সফলতার পেছনে। ফলে প্রত্যেকেই কোনো না কোনো সময় ক্লান্তি, একঘেয়েমি, দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্নতা বা স্ট্রেসের শিকার হচ্ছে। এসব মিলেই তৈরি হয় বার্নআউট বা অবসাদ। এর থেকেই পেশাগত অবসাদ বা জব বার্নআউটের সূচনা হতে পারে।

বার্নআউট কী: বার্নআউট হলো মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে ক্লান্তি, একঘেয়েমি, দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্নতা বা স্ট্রেসের লক্ষণগুলো জমা হতে থাকা। বহু স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে সহ্যক্ষমতা ছাড়িয়ে যায়। এ সময় মানুষ বার্নআউটে আক্রান্ত হয়। তখন সবকিছু ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসে। বার্নআউট তাদেরই বেশি হয়, যারা নিজের কাজের প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোযোগী ও নিবেদিত।

বৈশিষ্ট্য: বার্ন-আউটের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো হলো- ক্লান্তি, হতাশা, একঘেয়েমি, চাপ, অবসাদগ্রস্ত ইত্যাদি অনুভব করা।

জব বার্নআউট কী: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা নিজের পেশাগত বা ক্যারিয়ারগত সমস্যায় ভোগেন, তারাই জব বার্নআউটে আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে ব্যক্তি অনুভব করেন, তিনি তার পেশায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, এগিয়ে যেতে পারছেন না, নতুন কোনো দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন না, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে পারছেন না, সহকর্মী বা বসের ব্যবহারে মানসিক চাপ বোধ করছেন। কাজটিও নিজের কাছে বিরক্তিকর এবং একঘেয়েমি মনে হতে পারে। এছাড়া চাকরি না পাওয়া এবং সঠিক ক্যারিয়ারের পথ বেছে না নিতে পারায়ও কেউ কেউ বার্নআউট হয়ে পড়েন। পাশাপাশি কারও পারবারিক জীবনে অশান্তি এলে বার্নআউটের আকার ভয়াবহ হতে পারে।

লক্ষণ: জব বার্নআউটের কতগুলো লক্ষণ রয়েছে-
১. কাজের চাপে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি, বিষণ্নতা, অবসাদ ও হতাশা
২. পেশাগত বা ক্যারিয়ারগত সমস্যা
৩. পেশায় ক্লান্তি, বিরক্তি ও একঘেয়েমি
৪. সহকর্মীর সাথে খারাপ ব্যবহার
৫. পেশাগত কোনো সমস্যার সমাধান করতে না পারায় ভেঙে পড়া
৬. কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে না পারা
৭. কর্মস্থলে জোর করে উপস্থিত থাকা
৮. সহকর্মী বা বসের ব্যবহারে মানসিক চাপ বোধ হওয়া।

সমাধান: সচেতনতাই হলো স্ট্রেস থেকে মুক্তির মূল চাবিকাঠি। স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে এর থেকে মুক্তির পথ বেছে নেওয়া যায়। তাই এসব সমস্যার শুরু থেকেই কাছের মানুষ বা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়। তবেই সহজে খুব কম সময়ের মধ্যে এর সমাধান হতে পারে। মূলত, মানুষ পারিবারিক সমস্যার চেয়ে পেশাগত সমস্যার কারণে বেশি ভেঙে পড়ে। এক্ষেত্রে সমস্যার শুরু থেকেই সমাধান করা উচিত। বসের সঙ্গে কথা বলে নিজের সহায়ক শিডিউল বেছে নেওয়া যায়। কাজের বাইরে আপনি যা পছন্দ করেন, তার জন্য সময় বের করে নিতে পারেন। চিকিৎসক বা থেরাপিস্টের কাছেও মাঝে মাঝে যেতে পারেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *