টাকার বিনিময়ে গণভবনে প্রবেশ পাস, ফের রিমান্ডে মূলহোতা


প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে প্রবেশ করানোর কথা বলে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়া চক্রের মূলহোতা মো. ফয়সাল হোসেনের (৩৪) আবারও এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) একদিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক সুজন উল ইসলাম। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ মিল্লাত হোসেন এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে শনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ওই আসামির।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর গণভবনে প্রবেশ করার জন্য ঝালকাঠি থেকে আসেন শামসুন্নাহার। তিনি ঝালকাঠির সাবেক মেয়র আফজাল হোসেনের স্ত্রী। গণভবনের সামনে থেকে শামসুন্নাহারকে ডেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে সাত লাখ টাকা চুক্তি করে চক্রটি।

পরে গত ২৩ ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ২ জানুয়ারি তার কাছ থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। ২ জানুয়ারি তাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেয়ার আগে তার সব গয়না চক্রটি নিয়ে নেয়। পরে দেখা করে বের হলে এক লাখ টাকার বিনিময়ে আবার ফিরিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগ করা হলে শুক্রবার রাতে পল্লবী থেকে চক্রের মূলহোতা ফয়সাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন তেজগাঁও ডিভিশনের এডিসি রুবায়েত জামান, শেরেবাংলা থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ও উপ-পরিদর্শক সুজানুর ইসলাম।

ভুক্তভোগী শামসুন্নাহার বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য ঝালকাঠি থেকে ঢাকায় আসি। ২৩ ডিসেম্বর গণভবনের সামনে আসলে তারা আমাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে। আমি তাদের এক লাখ ৮০ হাজার টাকা দেই। তারপরও আমাকে টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি টাকা দিতে না চাইলে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। আমি বিষয়টি শেরেবাংলা নগর থানায় জানাই। শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত ফয়সাল হোসেনকে শেরেবাংলা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।’

মো. ফয়সাল হোসেন গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া থানার বন্নি গ্রামের মৃত ওমর আলী শেখের ছেলে।

শেরেবাংলা নগর থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সুজন উল ইসলাম বলেন, ‘শামসুন্নাহারের অভিযোগের ভিত্তিতে এডিসি ও ওসির নেতৃত্বে পল্লবী থেকে শুক্রবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা হয়েছে।’

শেরেবাংলা নগর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মামলার বাদীর তথ্যমতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, পল্লবী থানা এলাকা থেকে ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়। মামলায় ফয়সালকে এক নম্বর আসামি করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে আর কে কে আছে, সেটি খতিয়ে দেখে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’