ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের উদ্বোধনে আমন্ত্রনই পাননি সিটি মেয়র!


প্রকল্পের নাম “ডিজিটাল সিলেট সিটি”। দেশের প্রথম ডিজিটাল নগর গড়ে তুলতে শনিবার এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। তবে এতে উপস্থিত ছিলেন না সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ আয়োজনে তাকে আমন্ত্রনই জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত এই মেয়র।

শনিবার বিকেলে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিলেটের সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক মসম্মেলন কক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধান তথ্য কমিশনার মুর্তুজা আহমেদ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

নগরীকে ডিজিটালাইজেশনের এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র অনুপস্থিত থাকায় নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।

এ ব্যাপারে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী  বলেন, সিলেট সিটিতে ডিজিটাল করার জন্য অনুষ্ঠান হচ্ছে শুনেছি। কিন্তু আমাকে এতে আমন্ত্রন দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসন বা যারা আয়োজক তাদের পক্ষ থেকে থেকে আমাকে কোনো দাওয়াত দেয়া হয়নি। এখন কেন দাওয়াত দেওয়া হয় না আমি জানি না। এই সিটির নির্বাচিত মেয়র আমি। সিটি ডিজিটাল করা হচ্ছে অথচ ওই অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রন জানানো হয় না, এটা খুবই দুঃখজনক।

শনিবার বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের বাস্তবায়নাধীন “ডিজিটাল সিলেট সিটি” প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত ‌’পাবলিক ওয়াইফাই জোন” ও “আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্বলিত আইপি ক্যামেরা বেজড সার্ভেলেন্স সিস্টেম” এবং তথ্য কমিশনের উদ্যোগে বাস্তবায়িত “তথ্য অধিকার(আরটিআই) অনলাইন ট্র্যাকিং সিস্টেম” এর পাইলটিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো ফেস রিকগনিশন ও যানবাহনের নাম্বার প্লেট চিহ্নিতকরণ আইপি ক্যামেরা বসেছে সিলেট নগরীতে।

সংশ্লিস্টরা জানান, এ প্রকল্পে সিলেট নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১১০টি অত্যাধুনিক আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্বলিত আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। জিন্দাবাজার পয়েন্ট, সুরমা মার্কেট পয়েন্ট, লামা বাজার পয়েন্ট, আম্বরখানা পয়েন্ট, মাজারগেট, জেলখানা পয়েন্ট, সুবিদ বাজার পয়েন্ট, শাহী ঈদগাহ এলাকাসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এসব আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। স্থাপনকৃত এসব আইপি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিলেট কোতয়ালি মডেল থানায় মনিটরিং রুম স্থাপন করা হয়েছে। এ সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবে সিলেট মহানগর পুলিশ। এক্ষেত্রে অপরাধে জড়িত কোনো অপরাধী অথবা কালো তালিকাভুক্ত যানবাহনের নাম্বার যদি আইপি ক্যামেরার আওতাভুক্ত কোনো এলাকায় ধরা পড়ে, তবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে অটোমেটিক সিগন্যাল বেজে উঠবে, যা অপরাধীকে শনাক্ত করতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশকে (এসএমপি) দ্রুত সহায়তা করবে। তাছাড়া পুলিশ চাইলে যে কোনো অপরাধীর ছবি অথবা গাড়ির নম্বর দিয়ে আইপি ক্যামেরার সার্ভারে অনুসন্ধান (সার্চ) করে দ্রুত অপরাধী শনাক্ত করতে পারবে। এই অত্যাধুনিক সিস্টেমটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করবে।

এছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় সিলেট নগরের ৬২টি স্থানে মোট ১২৬ এক্সেস পয়েন্টের মাধ্যমে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হবে।