ডেঙ্গু ও করোনায় ত্রাহি অবস্থা


বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের মানুষের এমনিতে ত্রাহি অবস্থা। যেখানে ঘর থেকে বের হলেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। আর এখন ভোগান্তির মাত্রায় যুক্ত হয়েছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন ধরনের মশার উৎপাতে বাসাবাড়িতে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। আর বাইরে বের হলে করোনাভাইরাসের ছোবল- এই দুইয়ে মিলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এখন কঠিন বিপদের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। এ অবস্থা থেকে কবে মুক্তি মিলবে, কবে মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে তাও অনেকটা অজানা।

ব্যাংকার আরিফুর রহমান। পরিবার নিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর চারতলায় বসবাস করেন। সেখানেও মশার উৎপাত কম নয়। তিনি বলেন, চারতলায় থাকলেও মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। প্রতিদিন কত মশা মারা যায়! চার পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ, বছরের পর বছর ড্রেন নোংরা থাকে, কখনো পরিষ্কার করতে দেখি না। মশা মারার জন্য কবে স্প্রে করেছে, তাও জানা নেই। এখন আবারো করোনাভাইরাস সংক্রমণ উচ্চহারে শুরু হয়েছে। সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়।

দিন আনে দিন খেটেখাওয়া একজন শ্রমজীবী মো: নাজমুল। পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন রাজধানীর বাসাবোতে। তিনি বলেন, করোনার আতঙ্ক তো আছে। কিন্তু কী করব, পেটের তাগিদে ঘর থেকে বের হই। করোনার মধ্যে আবার নতুন করে শুরু হয়েছে মশার উৎপাত। প্রতিদিন মশা মারতে মারতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। কিন্তু যাদের মশা মারার দায়িত্ব তারা কি মারছে? তারা এসির মধ্যে বসে তামাশা দেখে! শুধু যাত্রাবাড়ী, বাসাবো, গোড়ান, খিলগাঁও, ওয়ারী এমন নয়; পুরো রাজধানীর বাসাবাড়ি ও অলিগলিতে মশার উৎপাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। বসে থাকলেই একঝাঁক মশা এসে ঝাপটে ধরে।

গত বুধবার রাতে এটিএন নিউজের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর সারোয়ার হোসেনের একমাত্র সন্তান শাবাব সারোয়ার মাত্র ১০ বছর বয়সে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। জাতীয় দলের ফুটবলার মোস্তাফা আনোয়ার পারভেজের দুই ছেলেরই ডেঙ্গু হয়। বড় ছেলে রাহিল ২২ জুলাই আক্রান্ত হয়। সাত বছরের ফুটফুটে ওই ছেলেটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যায়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *