পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে কারফিউ ভেঙ্গে বের হয়ে এসেছেন বিক্ষোভকারীরা। এদিকে ডেট্রয়েটে ৫ম দিনের বিক্ষোভে রাত ৮ টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা কারফিউ ভঙ্গ করে কিছু প্রতিবাদকারী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে থাকে। পুলিশ এসময় প্রায় ডজন খানেক বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে।
পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, কারফিউ কার্যকর হওয়ার পরে একদল বিক্ষোভকারীরা গ্রেটিট অ্যাভিনিউ অবস্থান করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শিল্ড হাতে বিক্ষোভকারীদের সামনে এবং পিছন থেকে ঘিরে রাখে। পুলিশকে লক্ষ করে নানা ধরনের কটুক্তি করতে থাকে বিক্ষোভকারীরা । পরবর্তীতে পুলিশ ডজনখানেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে।
ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের পাশাপাশি পুলিশি দমন-নির্যাতনের জবাবে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ডেট্রয়েট মেওয়ার মাইক দুগ্গান রাত ৮ টা থেকে সকাল ৫ টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেন। ডেট্রয়েট পুলিশের সূত্র মতে, এযাবৎ ডেট্রয়েটে ২৪৪ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে শুক্র ও শনিবার যথাক্রমে ৬০ ও ৮৪ জন গ্রেফতার এবং রবিবার ১০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ২৪৪ জনের মধ্যে শুধুমাত্র ৭২ জন ডেট্রয়েটের বাসিন্দা, বাকিরা বহিরাগত।
শক্ত হাতে বিক্ষোভ দমনের আহ্বান ট্রাম্পের : ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের ওপর আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ভিডিও টেলিকনফারেন্সে তিনি বলেন, ওয়াশিংটনে আমরা এমন কিছু করতে যাচ্ছি যা মানুষ আগে দেখেনি। অনেক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর বিক্ষোভ দমনে যথেষ্ট ভূমিকা নিচ্ছেন না বলে সোমবার টেলিকনফারেন্সে তিনি অভিযোগ করেন।
এছাড়া চলমান বিক্ষোভ দমনে সেনা অভিযান চালানোর হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই মধ্যে রাজধানীতে সেনা নামানোর পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। হুমকি দিয়েছেন, বিক্ষোভ প্রশমিত না হলে অঙ্গরাজ্যগুলোতেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেবেন তিনি।
ফ্লয়েডের মৃত্যু শ্বাসকষ্টে : পুলিশের নির্যাতনের শিকার জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু শ্বাসকষ্টেই হয়েছে। ফ্লয়েডের পরিবারের নিয়োগ করা বেসরকারি সংস্থার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, গলা ও ঘাড়ে চাপ প্রয়োগে শ্বাস বন্ধ হওয়ার কারণে ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়েছে। মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে ২৫ মে জর্জ ফ্লয়েডকে গ্রেফতার করতে গিয়ে নির্যাতন করেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিন। মৃত্যুর আগে ফ্লয়েডের বলে যাওয়া শেষ শব্দগুলোকে (আই কান্ট ব্রেদিং) স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করছেন অনেক শহরের বিক্ষোভকারীরা।