দুই সাংবাদিককে মারধর : শাহবাগের সেই এএসআই প্রত্যাহার


দুই সাংবাদিককে মারধরকারী ডিএমপি’র শাহবাগ থানার সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) মামুন হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করে ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক শেখ জাহাঙ্গীর আলম।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও সাজ্জাদ মাহমুদ খান বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচারের জন্য কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। একটি বাহিনীর সদস্য হয়ে এএসআই মামুন যে ব্যবহার করেছে তা অপেশাদার। আমরা তার শাস্তির দাবি জানাই। যাতে ভবিষ্যতে কোনো পুলিশ সাধারণ মানুষের সঙ্গে অপেশাদার আচরণ না করেন।’

ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, গত ২০ জানুয়ারি (সোমবার) সন্ধ্যায় মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার থেকে মোটরসাইকেলযোগে পান্থপথে কর্মস্থল বাংলা ট্রিবিউন অফিসে যাচ্ছিলেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের স্টাফ রিপোর্টার (ক্রাইম) সাজ্জাদ মাহমুদ খান ওরফে সাজ্জাদ হোসেন।

তারা পরীবাগ লিংক রোড দিয়ে যাওয়ার সময় যানজটের মধ্যে আটকা পড়েন। বিপরীত দিক থেকে মোটরসাইকেলযোগে শাহবাগ থানার এএসআই মামুন হোসেন দ্রুতগতিতে জাহাঙ্গীরের ডান পায়ে চাপা দেয়। জাহাঙ্গীর ও সাজ্জাদ প্রতিবাদ করলে এএসআই মামুন ইচ্ছাকৃতভাবে আরও দুই-তিনবার মোটরসাইকেলের পিকআপ বাড়িয়ে আমার পায়ে চাপা দিতে থাকে এবং মুখে গালাগালি করতে থাকে। তারা পুলিশ সদস্যের এই অপেশাদার আচরণের প্রদিবাদ করলে তাদের হত্যার হুমকি দেন।

জাহাঙ্গীর ও সাজ্জাদ জানান, ‘প্রতিবাদ করায় এএসআই মামুন অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি দিয়ে বলতে থাকেন, ‘আমি নামলে কিন্তু মারবো। তোকে পিষে ফেলবো। তাড়াতাড়ি গাড়ি সরা, নইলে মারবো।’ এসময় পথচারী এবং আশপাশের দোকানদাররা ঘটনাস্থলে জড়ো হলে জাহাঙ্গীরকে লাথি মেরে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন তিনি।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্ত এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাইকের ভুয়া নম্বর প্লেট ব্যবহার করতেন এএসআই মামুন

এ বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেছে, ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে জালিয়াতি করে ডিএমপি কমিশনারের নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট ব্যবহার করতেন তিনি। ঘটনার পর ওই নম্বর প্লেটের (ঢাকা মেট্রো হ-১২-৭৫০৫) সূত্র ধরে বিআরটিএ তে অনুসন্ধান করে জানা যায়, গাড়িটি ডিএমপি কমিশনার মহোদয়ের নামে নিবন্ধন করা। ডিএমপির ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের এটিএসআই আলী আফজাল ওই মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হলে আলী আফজালের গাড়িটি রাজারবাগ ট্রাফিক ব্যারাকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এএসআই মামুনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এটিএসআই আলী আফজালের সরকারি মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটটি জালিয়াতি করে নিজের ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন।