আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেয়া বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন চলমান বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের দল এবং প্রচার-প্রচারণা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
আজ (শনিবার) মহাখালীতে নিজ ব্যবসায়িক কার্যালয়ে গণমাধ্যমের কাছে এ হতাশা প্রকাশ করেছেন সাইফ পাওয়ারটেকের শীর্ষ কর্মকর্তা। তার অভিযোগ, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের এই টুর্নামেন্ট, যার মধ্য দিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে মুজিববর্ষের সূচনা হয়েছে। অথচ মর্যাদার এমন আসরেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেছেন, ‘নিম্নমানের দল এনে আগেই টুর্নামেন্টের জৌলুস নষ্ট করা হয়েছে। তার ওপর জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা বলে মানুষকে বোকা বানিয়েছেন বাফুফের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। টুর্নামেন্টের সাদামাটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছে। প্রচার-প্রচারণা থেকে র্যালি আয়োজন সবখানেই অবহেলার ছাপ ছিল সুস্পষ্ট। এ যেন বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির পাঁয়তারা। বঙ্গবন্ধু শুধু একজন ব্যক্তি নন, বঙ্গবন্ধু একটি ইনস্টিটিউশন- তার নামে এমন আয়োজন হতাশাজনক।’
নিম্নমানের দল আনার কারণ হিসেবে বাফুফের তাড়াহুড়োকেই দায়ী করেছেন তরফদার রুহুল আমিন, ‘এত তাড়াহুড়ো করে টুর্নামেন্ট আয়োজনের কারণটা কী! দায়সারা গোছের টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বাফুফে তাদের নির্দিষ্ট কোন উদ্দেশ্য সাধন করতে চায় কি না সেটাই আমার প্রশ্ন।’
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আলোচনায় নেই, অথচ চট্টগ্রাম আবাহনী আয়োজিত শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে আলোড়ন হয়েছে উল্লেখ করে তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেছেন, ‘একটি ক্লাব হয়েও চট্টগ্রাম আবাহনী শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ আয়োজন করে দেশব্যাপী আলোড়নের সৃষ্টি করেছিল, ফুটবলবিমুখ জাতিকে মাঠে ফিরিয়ে এনেছিল। সফল আয়োজন ছিল সেটি। গ্যালারি ছিল দর্শকপূর্ণ। উন্নতমানের ক্লাবগুলো খেলে গেছে। ফুটবলের মানও ছিল বেশ উন্নত। চট্টগ্রাম আবাহনী যদি এমন আয়োজন করতে পারে, তাহলে বাফুফে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টকে কোন মানে নামিয়ে দিয়েছে।’
তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আমরা দেখলাম বাফুফে একটি র্যালির আয়োজন করেছে। যে র্যালিতে জেলা, বিভাগ, ক্লাব ফুটবলের কর্তারা কেউ ছিলেন না। সাবেক খেলোয়াড়দেরও সেখানে দেখা যায়নি। দায়সারাভাবে র্যালি করে বাফুফে আসলে কি বোঝাতে চাইছে আমার বোধগম্য নয়।’
জাতীয় দলের প্রস্তুতিতেও যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি অভিযোগ করে তরফদার রুহুল আমিন বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আয়োজনে যেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি, তেমনি জাতীয় দলের প্রস্তুতিতেও। এমন সময় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজন করা হয়েছে যখন জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা এসএ গেমস, ফেডারেশন কাপ খেলে ক্লান্ত। মাঠের পারফরম্যান্সে খেলোয়াড়দের ক্লান্তির ছাপ দেখা গেছে। দলের প্রস্তুতিও ঠিকঠাক হয়নি। গোল্ডকাপ শুরুর মাত্র ৭ দিন আগে কোচ জেমি ডে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘সামনে বাফুফের নির্বাচন। তা নিয়েই তোড়জোড় কর্মকর্তাদের। মাঠে একটা নামকা ওয়াস্তে টুর্নামেন্ট বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ শুরু করেছে দিয়েছে, যেখানে যেকোনো উপায়ে কাপ জেতা চাই-ই চাই। তাদের যেকোনো মূল্য কাপ চাই। কাপ জিতুক, সে নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু মানটা আরেকটু ভালো করা উচিত ছিল। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের মান নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনা হচ্ছে, গণমাধ্যমে এ বিষয়ে লেখালেখি হচ্ছে।’