আমি কারো ব্যাংক একাউন্টের আকার দেখে মানুষকে পরিমাপ করি না, আমি মানুষকে তার চরিত্র, শক্তি, তাদের সততা ও সাহস দিয়ে পরিমাপ করি।
ওহাইও রাজ্যের টলেডোর এক নির্বাচনী সভায় ১২ অক্টোবর কথাগুলো বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী জো বাইডেন। টলেডো শহরের একটি পার্কিং লটে তিনি ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কারদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছিলেন যেখানে কমপক্ষে ৩০টিরও বেশী গাড়ী তৈরীর কারখানা রয়েছে।
তিনি শ্রমজীবি মানুষের মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করা ও মূল্যায়ন করায় শ্রমিক ইউনিয়নের প্রশংসা করেন। ২০০৮ সালে যখন সারা আমেরিকায় অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছিল তখন ওবামা ও তিনি নিজে গাড়ী শিল্পকে কিভাবে উদ্ধার করেছিলেন জনসভায় তার বর্ণনা দেন।
তিনি বলেন, ট্রাম্প করোনাভাইরাস মহামারী সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূল পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং ব্যর্থ হয়েছেন, ফলে আমেরিকার অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাইডেন আরো যোগ করেন, ট্রাম্প দীর্ঘ সময় প্রেসিডেন্ট থাকলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত বড় সিটি ডেট্রয়েট, ক্লিভল্যান্ড ও মিলওয়াকিতে ভোটের জন্য ডেমোক্রেটদের জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ২০১৬’র পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চান না ডেমক্রেটরা।
চার বছর আগে ডেমোক্রেটরা যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হারে তার একটি প্রধাণ কারণ ছিল কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতির হার কম। বিশেষ করে মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট, ওহাইও রাজ্যের ক্লিভল্যান্ড এবং উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের মিলওয়াকির মত বড় বড় শহরে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের উপস্থিতি ছিল কম। যার ফলে রিপাবলিকানরা জিতে যায়। তবে এবার আর এরকম হবার সুযোগ কম বলে মনে করছেন ডেমোক্রেট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন।
কারণ ডেমোক্রেটরা এবার এই বড় বড় শহরগুলোতে তাদের নির্বাচনী প্রচার, জনসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন এবং সবাই যাতে ভোট দেন তার চেষ্টা ও প্রচার করে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলোতে দেখা যায় জো বাইডেন ট্রাম্পের চেয়ে এ শহরগুলোতে এগিয়ে রয়েছেন। মিশিগানের লেফটেনেন্ট গভর্নর গারলিন গিলক্রিষ্ট যিনি ডেট্রয়েট নেটিভ ও বাইডেনের সমর্থক, তিনি বলেন, ২০১৬ সালে যা হয়েছে ২০২০ সালে তা হবার সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, আমাদের কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মধ্যে আমরা উপলব্দি করতে পারি যে এই মূহূর্তে জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে ভোট দিয়ে জিতিয়ে আনা প্রয়োজন, আমার বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত তারাই বিজয়ী হবেন।
একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে এই তিনটি শহরের ভোটারদের সাথে কথা বললে কয়েকজন ভোটার বাইডেনের প্রার্থিতা নয় বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতা, মেনোপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ড, সিষ্টেমিক বর্ণবাদ, পুলিশী বর্বতার বিষয়ে কথা বলেন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একজন ভোটার বলেন, আমরা এখন একটি রেইস ওয়ারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, আমাদের অবশ্যই এখন একটা পরিবর্তনের দরকার।
আরেকজন ৬৩ বছর বয়েসী সমাজকর্মী মহিলা ট্রাম্পকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে অবিহিত করেন, তিনি মনে করেন জো বাইডেন একজন সংবেদনশীল এবং তিনি মানুষকে বুঝেন, বুঝতে চেষ্টা করেন তাছাড়া এই করোনা মহামারী তিনি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞজনের পরামর্শ নিয়ে মোকাবেলা করতে পারবেন বলে মনে হয়।