পরিবেশদূষণ রোধের কথা বললেও, উল্টো পথে চীন!


দূষণমুক্ত পরিবেশের কথা বলে বিপরীত আচরণ করছে চীন। কারণ চীনই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি কয়লা উৎপাদন করে। বিদ্যুৎকেন্দ্রজুড়ে কয়লা সঞ্চয়ের সুবিধা সংযুক্ত করার পরিকল্পনাও করছে কমিউনিস্ট এই দেশটি। এতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, পরিবেশ সুরক্ষার কথা বললেও উল্টো পথে চীন!

‘এশিয়া টাইমস’ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন দূষণমুক্ত পরিবেশের প্রচার করলেও নিজেরাই রয়ে গেছে তার বিপরীত পথে। দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম কয়লা উৎপাদনকারী এবং ভোক্তা। অথচ আনুষ্ঠানিকভাবে দূষণকারী জ্বালানির ওপর নির্ভরতা হ্রাসের আহ্বান জানাচ্ছে।

দেশটির কয়লা ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাসোসিয়েশন (সিসিটিডিএ) জানিয়েছে, মার্চের শেষ সপ্তাহে চীনের উপকূলীয় পাঁচটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রে রেকর্ড চার লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টন কয়লা ব্যবহার করা হয়েছে। যা ১০ ফেব্রুয়ারির ব্যবহারের পরিসংখ্যানে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। অবশ্য ওই সময়টায় কয়লার ব্যবহার রেকর্ড পরিমাণ হ্রাস পেয়েছিল।

এশিয়া টাইমস জানিয়েছে, গত এপ্রিলে দেশটিতে আগের বছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেড়ে ৩৪ দশমিক ৪২ মিলিয়ন টন কয়লার আমদানি হয়েছে। যদিও মার্চের মাঝামাঝি সময়ে লকডাউন ব্যবস্থা শেষ হওয়ার পর কারখানাগুলো আবারও চালু হওয়ার কারণে চীনে আংশিকভাবে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছিল। এর চাহিদা আবার চলতি বছরের মে মাসে কিছুটা কমেছিল। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্প-কারখানা এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে অর্থনীতি আবার ফিরে আসার কারণে বাকি বছর এই চাহিদ আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

পরিবেশের কথা বললেও দুর্ভাগ্যজনক হলো, চীন ২০২০ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রজুড়ে কয়লা সঞ্চয়ের সুবিধা সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। যাতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে ১৫ দিন বা তার বেশি সাধারণ সরবরাহ নিশ্চিত হয়।

সবুজ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরির পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছে চীন। অথচ দেশটিতে কমছে না কয়লার ব্যবহার। ২০১৯ সালেও আগের বছরের তুলনায় এক শতাংশ বেড়েছিল এ জ্বালানির ব্যবহার। বলা হচ্ছে, এই বিদ্যুৎ চাহিদা আরো জোর দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া এই এক শতাংশ বৃদ্ধিই টানা তিন বছর ধরে কয়লার ব্যবহার বাড়ার বিষয়টি চিহ্নিত করেছে বলে জানিয়েছে এশিয়া টাইমস।

চীনা সরকারের তথ্য মতে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রায় ১৪১ মিলিয়ন টন কয়লা ব্যবহার হয়েছে। এর মধ্যে আবার সরকার দেশীয় কয়লা উৎপাদনেরও অনুমতি দিচ্ছে। সব মিলিয়ে দেশে বছরে প্রায় দুই দশমিক ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে কয়লা উৎপাদন। এ ছাড়া ২০১৮ সালে মাত্র ২৫ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন হয়েছিল অভ্যন্তরীণ অনুমোদনে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *