পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হওয়া যাবে,মিত্থা কথা !

banglashangbad

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সান্ধ্যকালীন কোর্সে কোনো ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হওয়া যাবে’ গণমাধ্যমে দেয়া ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের এমন বক্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত ফতুয়া’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ও সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদাদল আয়োজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ ভর্তি বাতিল ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।

হাসানুজ্জামান বলেন, ভর্তির বিষয়ে যে কথা উঠেছে সেটা কোনো ব্যক্তির নয়। সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে যে বিভাগ প্রোগ্রামটি করে তারা তাদের একাডেমিক কমিটিতে প্রথমে সুপারিশ করে। সুপারিশ পাঠানো হয় অনুষদে। তারপর এটা পাস হয় ফ্যাকাল্টি মিটিংয়ে। পাস হওয়ার পর উপাচার্যের কাছে প্রেরণ করা হয়। উপাচার্যের কাছে পাস হয়ে সেটা ডিন্স কমিটি হয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে আসে। একাডেমিক কাউন্সিলে পাস হওয়ার পর সেটা যায় সিন্ডিকেটে। এভাবেই কোনো নীতিমালা প্রণয়ন ও সংশোধন করতে হয়। এর বাইরে যদি কেউ কিছু বলে থাকে সেটা ফতুয়া।

মানববন্ধনে ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রায় প্রত্যেক বিভাগে সান্ধ্যকালীন কোর্স আছে এবং সব বিভাগের ভর্তি প্রক্রিয়া প্রায় একই ধরনের। মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট কোর্সে যে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে সেটার কোথাও ঢাবি শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হওয়া যাবে বলে উল্লেখ নেই। সুতরাং প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূত। এটার দ্বারা ঢাবির ভর্তি প্রক্রিয়ার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।

এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

সাদাদলের আহ্বায়ক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গোটা জাতির গৌরব ও অহংকারের প্রতিষ্ঠান। আমাদের ভর্তি প্রক্রিয়া বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রচলিত নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ও ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও গর্হিত অপরাধ। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট কোর্সে কোনোরকম ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি করা হয়েছে। ডিন এ ব্যাপারে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। এ ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। যে ৩৪ জনকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের যারা সহায়তা করেছে তাদের নৈতিকস্খলন হয়েছে।

প্রাণরসায়ন ও অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক লায়লা নুর ইসলাম বলেন, আজ আমরা অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে হাজির হয়েছি। ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা একটি গর্বের বিষয় ছিল। সেই প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে কিন্তু জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। আমি তাদের পদত্যাগ দাবি করছি।

পানি ও মৃত্তিকা বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান বলেন, ছাত্রদের সামনে আমরা মুখ দেখাতে পারছি না। ঢাবির মতো একটা প্রতিষ্ঠানে এ রকম অরাজকতা মেনে নেয়া যায় না। সারাদেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো তিলে তিলে ঢাবিকেও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাদাদলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।