আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ভারত লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন ১৬ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালাবে বলে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির করা দাবিকে ‘হাস্যকর’ ও ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ হিসেবে অভিহিত করেছে নয়াদিল্লি। হামলার কথা বলে পাকিস্তান যুদ্ধের উস্কানি দিচ্ছে বলেও পাল্টা দাবি করেছে ভারত।
পাকিস্তানের দৈনিক ডনে গত রোববারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি মুলতানে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ভারত চলতি মাসেই পাকিস্তানে হামলা করবে। ভারতের এমন অযাচিত হামলা রুখে দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন দাবির একদিন পর পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নয়াদিল্লি বলেছে, ‘কুরেশির এমন বক্তব্য উপমহাদেশে সরাসরি যুদ্ধের উস্কানি দিচ্ছে। পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকেও ভারতে হামলায় উস্কানি দেবে তাদের এমন দাবি।’
নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, এমন জঙ্গি হামলার বিষয়ে পাকিস্তানের কাছে কোনো তথ্য থাকলে সেটা নির্দিষ্ট মাধ্যমে ভারতকে জানানো উচিত তাদের। স্পর্শকাতর এমন একটি বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দেয়া কাণ্ডজ্ঞানহীনতা ছাড়া কিছু নয় বলেও দাবি করেছে ভারত।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুলতানের ওই সংবাদ সম্মেলনে জানান, লোকসভা নির্বাচনে ফায়দা নিতেই চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পাকিস্তানে ফের হামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ভারত। পাকিস্তান সরকার বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে ভারতের এরকম হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে পেরেছে বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, ‘(হামলার) সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও একটি হামলা হতে পারে। আমাদের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ১৬ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে হামলা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে আমি দায়িত্ব নিয়েই এমন কথা বলতে চাই, কেননা এটা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরও শিরোনাম হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে দেশটির কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিপিআরএফ) গাড়িবহরে সন্ত্রাসী হামলায় ৪০ জওয়ান নিহত হয়। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ।
পাকিস্তানকে হামলার জন্য দায়ী করে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানে ঢুকে হামলা চালায়। তার একদিন পর পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে ভারতে বিমান হামলা চালায়। তারপর থেকে দুই দেশের বৈরী সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।
ক্ষমতাসীন মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পাকিস্তানে সেই হামলার কৃতিত্ব নিয়ে এবং ভারতীয় নাগরিকদের জাতীয়তাবাদী চেতনা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জেতার চেষ্টা করছে। যে কারণে নির্বাচন চলাকালীন এমন সম্ভাব হামলার আশঙ্কা করছে পাকিস্তান।
প্রসঙ্গত, ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট পর্ব। সাত দফায় এ ভোটগ্রহণ শেষ হবে ১৯ মে। ফল প্রকাশ হবে ২৩ মে।