ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনের এ উৎসব শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে। এর ধারাবাহিকতায় হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ৭ নং ইউপির পাটলী-বুরুঙ্গা গ্রামে ঝমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দূর্গোৎসব।
২৪ বছর পদার্পণে এবারের আয়োজন শ্রী রামচন্দ্রের আহ্বানে দেবি দূর্গার অকাল-বোধন। এই থিম পূজোর মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলে ধরা হয়েছে মর্ত্যলোকে দূর্গাপূজার ইতিহাস। ভিন্নধর্মী এই শিক্ষাকেন্দ্রিক পূজামণ্ডপে ধর্মীয় কুইজ প্রতিযোগিতা, “হবিগঞ্জ ইসকন” দ্বারা পরিচালিত মঞ্চ নাটক, নৃত্যানুষ্ঠান, সঙ্গীতানুষ্ঠান সহ নানান আয়োজন মুখরিত হয়।
নতুন প্রজন্মের সচেতন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দ্বারা ও পূজা কমিটির পরিচালকদের পরিচালনায় সজ্জিত উৎসবপ্রাঙ্গণ অন্যরকম এক অনুভূতি জাগায় যা ভারতীয় ইতিহাস রামায়ণ এর লংকা-কান্ড উপলব্ধি করায়। পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী মা ভগবতীর শক্তি সম্পর্কে জ্ঞাত হচ্ছেন অনেকেই যা বর্তমান সময়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য চর্চার অন্যতম সংক্ষিপ্ত মাধ্যম।
এবার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এর জন্য চিন্তা করেন পূজা কমিটির সাজসজ্জা সম্পাদক “রনি রায়” এবং প্রযোজনায় সঙ্গে ছিলেন “সুব্রত দাশ শুভ্র”। আলোকচিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা এই ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, মনুজ দাশ, সৃষ্টি রায় শর্মি, রাহুল দেবনাথ, জয়ন্ত দাস, সাজু দাশ, রকি রায়, মৌ রায়, তন্নি রায়, প্রত্যয় চৌধুরী, প্রান্ত দেবনাথ, পাবেল এন. জে., অর্জুন রায়, মহিতোষ রায়, সুপ্রান্ত দাশ সহ আরো অনেকেই এবারের দলগত এই ধর্মীয় প্রচার গ্রহণযোগ্যতা পায় স্থানীয় সচেতনমহল, শিক্ষক সমিতি ও মুক্ত অঙ্গনে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে ভক্তদের প্রতি অনুরোধ করেছে পূজা উদযাপন পরিষদ। এছাড়া মেলা, আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি প্রতিযোগিতা বন্ধ এবং বিজয়া দশমীর দিন শোভাযাত্রা পরিহার করে প্রতিমা বিসর্জন দেয়ার নির্দেশ রয়েছে বলে জানানো হয়।
একই সাথে সারাদেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র্যাব ও বিডিআর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ এবং র্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। দুর্গোৎসব উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ১১৮টি পুজামণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই কর্ম-পরিকল্পনায় মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিলো নতুন সিলেট, শ্যামল সিলেট এবং বাংলা সংবাদ।