‘প্রাণটা আমার পালাই পালাই করছে। আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।’ নিজ মোবাইল থেকে ফেসবুক এমন স্ট্যাটাস দিয়ে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের রসলুপুর গ্রামের বাসিন্দা পুলিশের নায়েক শাহ মো. আ. কুদ্দুস সরকারি বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ভোর ৫টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনের মাঠের পাশে এ ঘটনা ঘটে। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কাফরুল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত ফারুকুল ইসলাম।
পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত ফারুকুল ইসলাম জানান, ভোর সোয়া ৫টায় অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে ডিউটির জন্য বের হয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটান। লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মাধবপুর তার গ্রামের বাড়ি অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফারুকুল ইসলাম আরও জানান, আত্মহত্যার ঠিক আগে ওই পুলিশ সদস্য তার ফেসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোষ্ট আপলোড করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। প্রাণটা আমার পালাই পালাই করছে। তবে সকল অবিবাহিতদের প্রতি আমার আকুল আবেদন, আপনারা পাত্রী পছন্দ করার আগে পাত্রীর মা ভাল কি না সঠিকভাবে খবর নিবেন। কারণ পাত্রীর মা ভালো না হলে পাত্রী কখনোই ভাল হবে না। ফলে আপনার সংসারটা দোজখের মতো। সুতরাং সকল সম্মানিত অভিভাবকগনের প্রতি আমার শেষ অনুরোধ বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিবেন।’ এই স্ট্যাটাস দিয়েই তিনি নিজ সরকারি বন্দুক দিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দেন।
নিহত পুলিশ কুদ্দুসের ভাই সিলেট রেঞ্জ কর্মরত এএসআই শাহ মো. তুহিন জানান, তার ভাই আ. কুদ্দুছ এক বছর আগে মাধবপুর উপজেলার মৌজপুর গ্রামের সৈয়দ মো. কাউছারের মেয়ে হাবিবুন্নাহারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রী হাবিবুন্নাহার ও শাশুড়ি সৈয়দা রুনিয়ার সঙ্গে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। কলহের জের ধরে তার স্ত্রী হাবিবুন্নাহার শ্বশুর বাড়িতে ৬ মাস যাবত অবস্থান করেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ২ মাস আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে হাবিবুন্নাহারকে তার শ্বশুরালয়ে পাঠানো হয়। এরপরও হাবিবুন্নাহার ও তার মায়ের কুদ্দুছের সঙ্গে কলহ লেগেই ছিল। যার কারণে কুদ্দুছের জীবন বিষিয়ে উঠে। পারিবারিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে কুদ্দুছ আজ ভোরে আত্মাহুতি দিয়েছে।