পানি বাড়ছেই, বিভাগজুড়ে বন্যার শঙ্কা


টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট বিভাগজুড়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়ে পড়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল। সুরমা, কুশিয়ারা ও সারী নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদীর পানি আরও বৃদ্ধির পূর্ভাবাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে আরও অনেক এলাকা তলিয়া যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, শুক্রবার বিকালে সিলেট অঞ্চলের ছয়টি নদীর পানি সাতটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে বলা হয়েছে, দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের কিছু অংশে আগামী ২৪ ঘণ্টা ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

তাতে আগামী ২৪ ঘন্টা সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।

“এর ফলে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কিছু নিচু এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টা স্বল্প মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।”

উদয় রায়হান বলেন, “এটা মৌসুমী বন্যা। উজানের ভারি বর্ষণ ও দেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এর সামান্য বিস্তৃতি বাড়বে। এ মৌসুমে হাওরাঞ্চলে এ ধরনের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। শনিবারের পরে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে আশা করি।”

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মৌসুমী বায়ুর একটি বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে ।

তবে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, তাতে দেশের উত্তরাংশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, সুরমার পানি সুনামগঞ্জ স্টেশনে বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার এবং কনাইঘাট স্টেশনে বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।

সারি গোয়াইনের পানি সারিঘাট স্টেশনে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার, জাদুকাটা নদীর পানি লরেরগড় স্টেশনে ৪৬ সেন্টিমিটার, পুরাতন সুরমার পানি দিরাই স্টেশনে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার এবং সোমেশ্বরী কলমাকান্দায় বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপরে ছিল ওই সময়।

এদিকে বর্ষায় হাওর অঞ্চলের পানি বাড়তে শুরু করায় সুনামগঞ্জ শহরের তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

কয়েকটি এলাকায় সুরমা নদীর পাড় উপচে সুনামগঞ্জের শহরের ষোলঘর, কাজিরপয়েন্ট, আরপিননগর, বিলপার, নতুনপাড়া, তেঘরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুরসহ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সিলেটের কানাইঘাট ও জৈন্তাপুরেও বন্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *