পাহাড়ে ফের রক্ত ঝরল


পাহাড়ে আবার সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ঘটল। এবার রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে কংলাক ভোটকেন্দ্র থেকে নির্বাচনি সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে প্রিসাইডিং অফিসারসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ১৪ জন। আলোকিত বাংলাদেশে প্রকাশ, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার নয় কিলোমিটার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের রাত সাড়ে ৮টার দিকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে সন্ত্রাসী ঘটনায় যখন বাঘাইছড়ি উপজেলার জনমনে আতঙ্ক ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তখন জানা গেল মঙ্গলবার সকালে ওই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। এই ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনগুলো অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবস্থায় সম্পন্ন হয়েছে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সহিংস ঘটনার তেমন নজির মেলেনি। উপজেলা নির্বাচনেও এর ধারাবাহিকতা লক্ষ করা গেছে। তাই হঠাৎ করে বিলাইছড়িতে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকা- কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। কী কারণে সহিংস ঘটনার উদ্ভব হলো, তা তলিয়ে দেখা জরুরি। হতাহতের ঘটনার পেছনে কি নির্বাচনি অনিয়ম দায়ী, নাকি এলাকাভিত্তিক রেষারেষি, তা খুঁজে বের করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, একটি ক্ষুদ্র ঘটনা থেকে ভয়াবহ কিছু ঘটতে পারে। বাঘাইছড়ি উপজেলার সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রশ্ন ছিল বলে প্রকাশ। এরকম কিছু ঘটে থাকলে তা অঙ্কুরেই সুরাহা করা দরকার ছিল। তবে যে কারণেই হত্যাযজ্ঞ ঘটে থাকুক প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের মাধ্যমে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

পাহাড়ে রক্ত ঝরার বিষয়টি যেন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এক হিসাবে জানা যায়, পাহাড়ে সংঘাতে ১৫ মাসে ৫৮ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে পাহাড়ের দুই জেলা রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে আঞ্চলিক দলগুলো সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। সবার মতো আমরাও চাই, পাহাড়ে সংঘাতের অবসান ঘটুক। যে কোনো সহিংস ঘটনাই শান্তির প্রতিপক্ষ। সন্ত্রাসী ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতি রইল আমাদের সহমর্মিতা। দায়ীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর কাম্য নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *