ফেসবুক স্ট্যাটাসের জন্য জিনিয়াকে বহিষ্কার

banglashangbad

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নিজ অফিস কক্ষে তিনি এ প্রেস ব্রিফিং করেন।

উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে ফেসবুক স্ট্যাটাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়নি বরং সে অন্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ লেখনি এবং কুৎসা রটনাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ফেসবুক, ই-মেইল আইডি হ্যাক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক করে ভর্তি পরীক্ষা বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। ইতোমধ্যে দুবার আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে।

তিনি সাংবাদিকদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী চৌধুরী সালমান রহমানের সঙ্গে ফাতেমা তুজ জিনিয়ার ম্যাসেঞ্জারের কথোপকথন দাবি করে এর কিছু অংশ তুলে ধরেন। ওই কথোপকথনের উল্লেখযোগ্য অংশ হলো- ‘আমি একটি মিশন হাতে নিব/ কিসের?/ হ্যাক। অলরেডি দু’জনের করেছি/ কাদের?/ পাসওর্য়াড হাতে নিয়েছি, সেটা পরে বলব। কিন্তু আপাতত বুঝতে পারবে না/ আচ্ছা চালিয়ে যান/ যেহেতু আইডিতে ঢুকেনি, তারা টেরও পায়নি। ইভেন তারা যদি পাসওর্য়াডও চেঞ্জ করে সেটাও চলে আসবে এমন সিস্টেম করে রাখছি। এরপর সব আইডিতে ঢুকবো, আমি চেষ্টা করতেছি ওয়েব হ্যাক করার। সেজন্য মনোয়ারের পেছনে আর আক্কাছের পেছনে ছোটা লাগবে/ এরা কী করবে?/ ওদের মাধ্যমে করা লাগবে, ওরা পাসওয়ার্ড জানে।/’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে ফাতেমা তুজ জিনিয়া অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য দাবি করে প্রদর্শিত স্ক্রিনশটের কিছু অংশ এরকম- ‘ম্যামদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে কিছু জানেন?/ প্রমাণ নেই?/ কোন কোন ম্যাম?/ বিতান, ইকোর, লম্বু আর ফাতেমা/ ওকে। খেলা হবে। আক্কাস কে জড়িয়ে খেলতে হবে।/’

ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, ফাতেমা তুজ জিনিয়া বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে মিথ্যাচার ও অশালীন মন্তব্য করেছে। অথচ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের কোনো টাকা এখনও খরচ হয়নি। সে সরকারবিরোধী সংগঠনের নেতা ও বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে শিক্ষকদের অপমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা অন্যায়, গর্হিত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উপাচার্য আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল উদ্দেশ্যমূলক, কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে চলছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি আশিকুজ্জামান ভুইয়াসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।