ডেস্ক রিপোর্ট :: ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় শিল্প মেলা-২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই মেলা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে যথেষ্ট অবদান রাখবে। জাতির পিতা সবসময় দেশের মানুষের উন্নয়নের কথা ভাবতেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারে জাতির পিতা শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। বাংলাদেশে শিল্পায়নের যাত্রাটা তখন থেকেই শুরু। ঢাকা বিদ্যুতায়ন বোর্ড, ওয়াসা, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এসবই তার হাতে গড়া। পাকিস্তানিরা চায়নি তাদের বাইরে বাঙালিরা উদ্যোক্তা হোক। বঙ্গবন্ধুই বাঙালিদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন। আজকের বিসিক শিল্প নগরীও বঙ্গবন্ধুর অবদান। এগুলো ৫৪ ও ৫৬ সালে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি এগুলো করেছিলেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কৃষিভিত্তিক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কৃষিভিত্তিক শিল্পের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। কৃষি ছাড়া খাদ্য চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয় বিধায়, শিল্পায়নের পাশাপাশি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের বিকাশের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। শ্রমিকদের পাশাপাশি যারা শিল্প পরিচালনা করবে তাদেরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যেই সরকার বিভিন্ন বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ফ্যাশন ডিজাইনিং, ডিজিটাল, মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি ব্যাংক সুদের হার কমানো প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ব্যাংক সুদের হার কমানোর ব্যাপারে কাজ করছে। এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ সময়মত ফেরত দেয়ার আহ্বান জানান। আপনারা যদি সময়মত ঋণ পরিশোধ করেন তাহলে দ্রুত সুদের হার কমানো সম্ভব হবে। সরকার থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে কয়েকটি ব্যাংক সুদের হার কমালেও অনেকে ব্যাংক কমায়নি। তারা সুযোগ সুবিধা নিয়েও সুদের হার কমায়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, সেসব ব্যাংকের মালিকদের কলকারখানা আছে, তারাও তো ব্যবসা বাণিজ্য করে। তারা ব্যাংক ও শিল্প উভয়ই চালাচ্ছে আবার সুদের হার কমাচ্ছে না। তাদের ভ্যাট, ট্যাক্স, কাগজপত্র ঠিক আছে কি-না সেটা দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি তৈরি করে রফতানি করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন বোয়িং কিনলাম তখন জানলাম এর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বিভিন্ন দেশে তৈরি হয়েছে। আমরাও এরকম বিভিন্ন যন্ত্রপাতি প্রস্তুত করতে পারি কি-না সেটা ব্যবসায়ীদের ভেবে দেখার জন্য আহ্বান জানান তিনি। আমাদের দেশের মানুষ অনেক ট্যালেন্টেড, ট্রেনিং দিলেই সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার প্রমুখ।