বন্যা কবলিত ২৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত ১৩ হাজার ৪০০ পরিবারের মাঝে ফুড পার্সেল বিতরণ করবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। প্রতি প্যাকেজে থাকবে সাড়ে সাত কেজি চাল, এক কেজি ডাল, এক লিটার তেল, চিনি এক কেজি, লবণ এক কেজি এবং সুজি আধা কেজি।
বিতরণের জন্য ইতিমধ্যে এসব খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই জেলা পর্যায়ে এই ফুড প্যাকেজ বিতরণ শুরু হবে বলে রেড ক্রিসেন্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। জেলাগুলোর রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের মাধ্যমে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে এই ফুড প্যাকেজ বিতরণ করা হবে। এ ছাড়াও অসহায় এসব পরিবারে বিতরণ করা হচ্ছে বিশুদ্ধ খাবার পানি।
সোসাইটি জানায়, বন্যাকবলিত জেলাগুলোর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহে খোলা হয়েছে রেড ক্রিসেন্ট কন্ট্রোল রুম। এ ছাড়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রশিক্ষিত ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স টিম (এনডিআরটি), ন্যাশনাল ডিজাস্টার ওয়াটসন রেসপন্স টিম, ইউনিট ডিজাস্টার রেসপন্স টিমের সদস্যসহ ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবকদের।
সোসাইটির ডিজাস্টার রেসপন্স বিভাগের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বন্যা মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে ইতিমধ্যে দুটি সমন্বয় সভা করাসহ বনার্তদের সহায়তায় বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রথম ধাপে বন্যা শুরু হওয়ার আগেই বন্যা মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সোসাইটির পূর্বাভাস ভিত্তিক ফিনান্সিং (এফবিএফ) প্রকল্পের আওতায় পূর্বাভাস অনুযায়ী বন্যা কবলিত কুড়িগ্রাম, জামালপুর ও গাইবান্ধা জেলার তিন হাজার ৮০০ পরিবারের মাঝে পরিবার প্রতি সাড়ে চার হাজার টাকা করে সর্বমোট এক কোটি ৭১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
সোসাইটির ডিজাস্টার রেসপন্স বিভাগ জানায়, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় মজুদ রাখা হয়েছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, তারপলিন শিট, জেরি-ক্যান, শেল্টার টুল কিটস্, হাইজিন বক্স, ডিগনিটি কিট, স্লিপিং ম্যাট, সিজিআই শিট, ফ্যামিলি টেন্ট ও কম্বল। এ ছাড়া দুর্গত মানুষদের নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও জামামালপুরে ‘মোবাইল ওয়াটার পিউরিফিকেশন কিট (ম্যান প্যাক) এর মাধ্যমে নদী/জলাশয়ের পানিকে বিশুদ্ধ করে বন্যার্তদের মাঝে নিরাপদ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, একটি ম্যান প্যাক কিটের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ৭০০ লিটার করে প্রতিদিন চার হাজার লিটার পানি বিশুদ্ধকরণ করা যায়। সোসাইটির মহাসচিব মো. ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রস্তুত রয়েছে। বন্যাকালীন এবং বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য জরুরি সাড়া প্রদানকারী টিমসহ সব কর্মকর্তাকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বন্যা ছাড়াও ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং বৈশ্বিক মহামারি কভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় জনগণের জন্যও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।