ডেস্ক রিপোর্ট :: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এবার আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতাসহ ৮ দফা দাবিতে গত চারদিন (২ ঘণ্টা করে) অবস্থান কর্মসূচিপালন করে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার থেকে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরাও।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। মানববন্ধন থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীরা এখন এক দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। আর তা হলো উপাচার্যের পদত্যাগ। তিনি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেন উপাচার্য। তার ওই বক্তব্যের পর ২৮ মার্চ থেকে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। একই দিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্লাস-পরীক্ষা এবং আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করে। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে ওইদিনই তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। উপাচার্য ২৯ মার্চ তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিলেও তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। তারা তার পদত্যাগের দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মশাল মিছিল, রক্ত দিয়ে দেয়াল লিখন, প্রতীকী অনশন, কালো কাপড়ে মুখে বেঁধে বিক্ষোভ এমনকি মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন। শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মুখে উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক গত বৃহস্পতিবার ১৫ দিনের ছুটির জন্য আবেদন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই উপাচার্য ক্যাম্পাসে ফিরে আসার আর কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাকে ঘটনার পর থেকেই অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তাকে ১৫ দিনের ছুটিতে নয়, হয় তার কর্ম মেয়াদকাল ২৮ মে পর্যন্ত ছুটি নতুবা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ২৩ দিনের মাথায় তাদের সঙ্গে যোগ দিল শিক্ষক-কর্মচারীরারা।
যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক জানান, ব্যক্তিগত কারণে তিনি ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করেছেন। এরপর নতুন করে কোনো ছুটির আবেদন করেননি। সময় বাড়িয়ে নতুন আবেদন করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করছেন না।
তিনি বলেন, একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তাদের ইন্ধনেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে কুচক্রী ওই মহলটি।