বলটুর ছক: এটি একটি রম্য রচনা


মামা সুখবর আছে

তা আমি তোমার ফোন পেয়েই বুঝতে পেরেছি। তা যা বলার সংক্ষেপে বলো।

না মানে ঐ সাংবাদিকতার উপর বেশ কয়েকটা পুরষ্কার পেয়েছি।

ভালো। ৫ মাসে অর্জন তো খারাপ না, তবে আমি আশাবাদী আগামী ২/১ বছরের মধ্যে আরো অনেক অনেক টনকে টন পুরষ্কার পাবে তবে ভাগ্নে ৩৫ বছর সাংবাদিকতা করলাম কিন্তু ভাগ্যে একটা পুরষ্কারও নাই।

মামা লাইনে হাটতে হয়, সঠিক সময় সঠিক জায়গা মতো পালিশ দিতে হয়।

তা আর কি খবর বলো

না, মানে বলছিলাম ভোটে খাড়াইমু

ভোটে দাড়াইবা ভালো কথা কিন্তু তোমারে ভোট দিবো কে। যতদূর জানি তোমার না আছে এখানে বড় গোষ্ঠী, না আছে টাকা।

আরে না মামা এখন তো ভোট করে সিন্ডিকেট। আমি একটা সিন্ডিকেট বানাইছি।

ভালো। তো কোন পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করবে।

সভাপতি।

আমার তো মনে হয় তুমি সাধারণ সম্পাদক পদে দাড়াইয়া কুদ্দুছের বাপরে সভাপতি দিলে ভাল হয় কারণ উনিতো দীর্ঘদিন যাবত কমুউনিটির জন্য কাজ করছেন।

মামা সবাইকে দিয়ে সব কাজ হয় না।

তো কত সদস্যের কমিটি।

৩১ সদস্যের।

এর মধ্যে নারী সদস্য কয়জন।

না একজনো নাই

তাহলে কেমনে হবে। নারীবাদীরা ধরবে না।

তো এক কাজ করি মামা আমাদের পুবের বাড়ীর মিঠামুখি খালা আছে না উনারে দপ্তর সম্পাদক পদটা দিয়ে দেই। পানের বাটা নিয়ে অফিসে বসবে আর বাবা জর্দা দিয়ে পানের খিলি বানিয়ে মুখে দিয়ে আম জনতার সাথে টেলিফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলবে।

আর মফিজচাচারে কোথায় দিবে, উনিতো মুরুব্বি মানুষ।

উনাকে আমাদের উপদেষ্টা বানাবো। উনার সাথে আলাপ করবো।

আর ঐ কেবলাদারে কোথায় দিলে। যিনি সব কমিটিতেই থাকেন।

নতুন একটা পদ সৃষ্টি করা হয়েছে, উনারে দিবো ‘নিরাপদ টাকা সংরক্ষক সম্পাদক’ পদে।

মানে শিয়ালের কাছে মুরগী জিম্মা

তা ভাগ্নে বড় পদে যে নির্বাচন করছো, নির্বাচিত হওয়ার পর কিন্তু তোমারে একটা বড় বেমারে ধরবো।

সেটা কি বলেন মামা। তো সেই বেমারের নাম কি মামা।

বেমারের নাম হচ্ছে, ‘পদ ছাড়ুম না’

সেটা কি একটু বুঝিয়ে বলবেন।

সেটা একেবারে জলবত তলরং, নির্বাচিত হওয়ার পর বছরের পর বছর পার হয়ে গেলেও নির্বাচন নেই, সভা নেই। পদ আকড়ে ধরে রাখতে এহেন কোন কাজ নেই পদলোভীরা করে না। যাতে সারা জীবন এই পদে থাকতে পারে সেটাই হয়ে যায় তার একমাত্র কাজ। এদেরে টানা হ্যাচড়া করে বেজ্জত করে না নামানো পর্যন্ত এরা পদ আকড়ে থাকতে চায়। তো তোমার এ অবস্থা আমি দেখতে চাই না।

না মামা এমনটা হবে না।

ভোটের আগে অবশ্য এমটাই বলতে হয়।

মামা ভোট কিভাবে হবে, কে জিতবে, কে হারবে তার একটা ছক এঁকেছি

এমন সময় টেলিফোনের লাইনটা কেটে গেলো। মনে মনে ভাবলাম ভাগ্নে ছক কেটে এগোচ্ছে। সেই ছকে ছক মিলিয়ে ছকের বারোটা বাজিয়ে ছক্কা মেরে ভাগ্নে আমার কত দূর এগিয়ে যাবে সেটা দেখার প্রতিক্ষায় রইলাম।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *