বাণিজ্য মেলায় পাটের আসবাব, দাম বেশি বিক্রি কম


প্রযুক্তির কল্যাণে কাঠ, প্লাস্টিক কিংবা অ্যালুমিনিয়ামের পরিবর্তে পাট দিয়েই তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন চেয়ার-টেবিল, ঢেউটিন, প্লেনশিট, ঘরের দরজা-জানালা থেকে শুরু করে বেসিন, ট্রে, হার্ডবোর্ড, হেলমেট ইত্যাদি। কিন্তু কাঠ বা প্লাস্টিক পণ্যের তুলনায় পাটের তৈরি এসব পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় বিক্রি কম।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার চার নম্বর মিনি প্যাভিলয়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের উদ্ভাবিত পাটের এসব পণ্য প্রদর্শিত ও বিক্রি হচ্ছে। ব্যক্তিক্রমী এসব পণ্য বেশ আগ্রহ নিয়ে দেখছেন ক্রেতারা। তবে দাম শুনেই অনেকে ফিরে যাচ্ছেন।

প্যাভিলনের বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছ, ছোট আকারের প্রতিটি ট্রে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়, বড় ট্রে ৫০০ টাকা। একই মাপের প্লাস্টিকের ট্রে অন্য স্টলে পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। প্রতি হার্ডবোর্ড বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। অথচ এ ধরনের প্লাস্টিকের বোর্ড বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। এছাড়া কাঠের চেয়ারের তুলনায় অনেক বেশি দামে পাটের চেয়ার বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজের একটি ডাইনিং টেবিল নিচ্ছে ছয় হাজার টাকা।

এ প্যাভিলনের এক বিক্রয় প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে  বলেন, তুলনামূলক দাম বেশি হওয়ায় পাটের এসব পণ্য বিক্রি বেশি হয় না। তবে এসব পণ্য বেশ শক্তিশালী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের মার্কেটিং ম্যানেজার মো. জাকির হোসাইন খান বলেন, এ ধরনের পণ্য গত ২০ বছর ধরে বাজারজাত করে আসছি। তবে সাধারণত মানের বিষয়ে কম্প্রোমাইজ করি না। তাই দাম কমানো সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন সূত্রে জানা গেছ, কাঠের জন্য নির্বিচারে নিধন হচ্ছে এদেশের বনাঞ্চল। তাই কাঠের অন্যতম প্রধান বিকল্প হিসেবে পাটের কাপড়ের সঙ্গে বিদেশ থেকে সরাসরি আমদানিকৃত অতি উন্নতমানের গ্লাস ফাইবার, রেজিন ও অন্যান্য রাসায়নিকদ্রব্য মিশিয়ে এসব আসবাব তৈরি করা হয়।

এসব আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী কাঠের মতো বেঁকে যায় না বা ঘুনে ধরে না এবং আগুনেও পোড়ে না আর পানিতে নষ্ট হয় না। তারপরও স্বাভাবিকভাবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহারযোগ্য। কাঠের আসবাবপত্রের মতো এসব দ্রব্যের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নেই বললেই চলে। সাবান-পানি দিয়ে সহজেই পরিষ্কার করা যায়।