বিচার চেয়ে মেয়ের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন বাবা-মা


লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় দুই সন্তানের জননী ফাতেমা বেগম (২৬) হত্যার বিচার চেয়ে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন মা-বাবা।

একই সঙ্গে মেয়ের মরদেহ উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা। সোমবার (০৬ জানুয়ারি) দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানি পিত্তিফাটা গ্রামে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

মেয়ের হত্যা মামলা চালাতে গিয়ে আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে পরিবার। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সুবিচার পাওয়ার আশায় প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে আছে তারা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফাতেমার বড় ভাই মতিউর রহমান ও বাবা-মা।

ফাতেমার বড় ভাই মতিউর রহমান বলেন, ১৩ বছর আগে পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ইঞ্জিনপাড়ার কবেদ আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে ফাতেমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলে জন্ম হয়। ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর স্বামী রাজ্জাক বাড়িতে না থাকার সুযোগে ফাতেমাকে রাতের আঁধারে শ্বাসরোধে হত্যা করে দুই দেবর ও শ্বশুর। পরে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে শাড়ি দিয়ে ফাতেমাকে গাছে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

তিনি বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় আমার বাবা তমিজ উদ্দিন পাটগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করতে চাইলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। ওই সময় বাবার স্বাক্ষর নিয়ে অপমৃত্যু মামলা নেয়া হয়। এরপর বাবা বাদী হয়ে লালমনিরহাট আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ফাতেমার স্বামী আব্দুর রাজ্জাক, দুই দেবর মানিক ও হানিফসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

মামলার একমাস পর ফাতেমা আত্মহত্যা করেছে বলে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করি আমরা। তখন মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন লালমনিরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। পরে রংপুর পিবিআই মামলার সাক্ষীদের কথা না শুনে ফাতেমা আত্মহত্যা করেছে বলে প্রতিবেদন দেয়। এরপর হাইকোর্টে আপিল করা হয়। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে চলমান।

ফাতেমার বাবা তমিজ উদ্দিন বলেন, এক বছরের বেশি হলো মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আজো মেয়ে হত্যার বিচার পাইনি। টাকা দিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তন করেছে আসামিরা। আমি পুনরায় মরদেহের ময়নাতদন্তের দাবি জানাই।