বিপিএল ইতিহাসে এত বাজে খেলেনি আর কোনো দল


চলতি বঙ্গবন্ধু বিপিএলে মিরপুরে খেলা টানা তিন ম্যাচ হেরে ভাগ্য ফেরাতে চটগ্রামের সাগরিকার পথে পা বাড়িয়েছিল সিলেট থান্ডার। সেখানে তাদের দিকে মুখ ফুটে চেয়েছিল ভাগ্যদেবতা। সাগরিকায় প্রথম ম্যাচে হেরে গেলেও, পরেরটিতেই শক্তিশালী খুলনা টাইগার্সকে ৮০ রানের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল সিলেট।

সে ম্যাচে আসরের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন সিলেটের ক্যারিবীয় তারকা আন্দ্রে ফ্লেচার। মাত্র ৩৮ বলে ৯০ রান করেছিলেন আরেক ক্যারিবীয় জনসন চার্লস। সিলেটের ভক্ত-সমর্থকদের মনে আশা ছিলো, সে ম্যাচ দিয়েই হয়তো ছন্দ খুঁজে পাবে তাদের প্রিয় দল।

কিন্তু কিসের কী! খুলনার বিপক্ষে ৮০ রানের সেই জয়ের পর সাগরিকা, সিলেটের লাক্কাতুরা ও ঢাকার মিরপুর মিলিয়ে টানা ৭টি ম্যাচে হেরেছে সিলেট। যার সবশেষটি ছিলো আজ (মঙ্গলবার) কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে। যেখানে সৌম্য সরকারের ঝড়ো ফিফটিতে ৫ উইকেটে হেরে গিয়েছে সিলেট।

সবমিলিয়ে ১২ ম্যাচে ১ জয়ে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে শেষ হলো সিলেটের বঙ্গবন্ধু বিপিএল মিশন। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এর চেয়ে বাজে ফলাফল দেখতে হয়নি আর কোনো দলকে। আগের ছয় আসরে সবচেয়ে খারাপ করা দলগুলোও অন্তত ২টি ম্যাচ জিতেছিল। কিন্তু সিলেট এবার জিততে পেরেছে মাত্র ১ ম্যাচ।

অবশ্য সিলেটের দলের এমন বাজে ফলাফলের নজির নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতি আসরেই তারা থাকে পয়েন্ট টেবিলের নিচের। ২০১৩ সালে হওয়া বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে মুশফিকুর রহীমের নেতৃত্বে সেরা চারে খেলাই একমাত্র সাফল্য সিলেটের দলের। সেবারও ফাইনাল খেলা হয়নি সিলেট রয়্যালসের।

এছাড়া আর কোনো আসরেই সেরা চারে থাকতে পারেনি সিলেটের দল। ২০১৬ সালের আসরটিতে তারা অংশ নেয়নি। বাকি চার আসরের ফলাফল যথাক্রমে- প্রথম আসরে (২০১২) ১০ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে সবার নিচে, তৃতীয় আসরে (২০১৫) ১০ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে ছয় দলের মাঝে পাঁচ নম্বরে, পঞ্চম আসরে (২০১৭) ১২ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে সাত দলের মাঝে পাঁচ নম্বরে এবং ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে হওয়া ষষ্ঠ আসরে ১২ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে তারা ছিলো সাত দলের মধ্যে ছয় নম্বরে।

যার মানে দাঁড়ায় এখনও পর্যন্ত ছয়বার বিপিএলে অংশ নিয়ে মাত্র একবার সেরা চারে পৌঁছানো ছাড়া আর কোনো সাফল্যই নেই সিলেটের। বাকি পাঁচবার তারা ফিরেছে খালি হাতে। যার মধ্যে এবারের ফলাফলটি টুর্নামেন্টের ইতিহাসেরই সবচেয়ে বাজে ফলাফল।

বিপিএলের সাত আসরে টেবিলের তলানিতে থাকা দলগুলো
প্রথম আসর (২০১২) – সিলেট রয়্যালস, ১০ ম্যাচে ২ জয়
দ্বিতীয় আসর (২০১৩) – খুলনা রয়্যালস বেঙ্গলস, ১২ ম্যাচে ৩ জয়
তৃতীয় আসর (২০১৫) – চিটাগাং ভাইকিংস, ১০ ম্যাচে ৩ জয়
চতুর্থ আসর (২০১৬) – বরিশাল বুলস, ১২ ম্যাচে ৪ জয়
পঞ্চম আসর (২০১৭) – চিটাগাং ভাইকিংস, ১২ ম্যাচে ৩ জয়
ষষ্ঠ আসর (২০১৯) – খুলনা টাইটানস, ১২ ম্যাচে ২ জয়
সপ্তম আসর (২০১৯-২০) – সিলেট থান্ডার ১২ ম্যাচে ১ জয়